ছেলের নামে থানায় অভিযোগ । ছেলেকে বাড়িতে না পেয়ে বাবাকে গ্রেফতার করে থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে পুলিশ। বাবার অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে ছেলে। সেই ঘটনায় এবার পুলিশকে নোটিস পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তীশগড়ের বিলাসপুর জেলার ভাইন্সবদ গ্রামে। আত্মহত্যা করা যুবকের নাম হরিশ চন্দ্র গেন্ডল। ২৩ বছর বয়সি হরিশ বাবার উপর পুলিশি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে লজ্জায় এবং অপমানে গত সোমবার বেলহা স্টেশনে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন।
এই ঘটনা জানতে পেরেই বৃহস্পতিবার ছত্তীশগড় পুলিশকে নোটিশ পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। চার সপ্তাহের মধ্যে এই ঘটনার রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। মৃতের পরিবারকে কোনওরকম ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে কিনা সে কথাও জানাতে বলা হয়েছে পুলিশকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে ছিলেন হরিশ। সেই সময় এক স্কুল ছাত্রীর সাইকেলে ধাক্কা মারে তাঁর মোটরসাইকেল। এরপর হরিশের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই ছাত্রী। অভিযোগ পেয়েই হরিশের বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। কিন্তু সেই সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁকে না পেয়ে তাঁর বাবা ভাগীরথীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সূত্রের খবর, থানায় কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক এবং কনস্টেবল মিলে ভাগীরথীবাবুকে বেধড়ক মারধর করে। সে কথা জানতে পেরেই লজ্জায়, অসম্মানে আত্মঘাতী হন হরিশ।
‘ওই যুবকের বাবাকে পুলিশ বেআইনিভাবে গ্রেফতার করেছিল এবং আটকে রেখেছিল। খবরে প্রকাশ, তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। সেই বিব্রত অবস্থা থেকে মুক্তি পেতেই তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেছেন। অমানবিক এবং ও অসংবেদনশীল আচরণের জন্য একটা মূল্যবান প্রাণ ঝরে গেল,’ বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
হরিশের মৃত্যুর পরেই থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামের লোকজন। চাপের মুখে মঙ্গলবার রূপলাল চন্দ্র নামে পুলিশের এক আধিকারিক, যিনি ভাগীরথীবাবুকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে, তাঁকে সাসপেন্ড করেছেন বিলাসপুরের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট পারুল মাথুর। তার দুদিনের মাথাতেই ছত্তীশগড় পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করল মানবাধিকার কমিশন।