গোপনে গৃহবধূর গোসলের ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 01-12-2022

গোপনে গৃহবধূর গোসলের ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড
বাথরুমের ভেতর গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে অর্থ দাবির দায়ে এক যুবককে মোট ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

একইসঙ্গে আসামিকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং জরিমানার টাকা আদায় করে তা ভিকটিমকে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। অনাদায়ে ৬ মাস করে ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এদিন মামলার পৃথক তিনটি ধারায় আসামিকে এই জেল-জরিমানা করা হয়। সেইসঙ্গে মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজামূলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডিত আসামির নাম দেওয়ান আরিফুর রহমান ওরফে আরিফ (৩৮)। তিনি বগুড়া জেলার উপশহর হাউজিং এস্টেট এলাকার মৃত দেওয়ান আক্তারের ছেলে।  

মামলায় জামিন পাওয়ার পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই পলাতক রয়েছেন। যে কারণে তার অনুপস্থিতেই এই রায় ঘোষণা করেন আদালত।

রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইসমত আরা বেগম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ২০২১ সালের ২ মে বগুড়া সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। বগুড়ার উপশহর পদ্মা ভবন এলাকার বাসিন্দা মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসামি আরিফ বাদী শরীফুলের বন্ধু। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে বাসায় যাতায়াত। কোনো এক সময় আসামি তার বন্ধুর বাথরুমে গোপন ক্যামারা স্থাপন করেন। ওই ক্যামেরায় বন্ধুর স্ত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করেন। এরপর বাদীর স্ত্রীর ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারে তা পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। বাদীর স্ত্রী লোকলজ্জার ভয়ে তার এক আত্মীয়কে দেওয়ার নাম করে টাকা সংগ্রহ করে আরিফকে ৫ লাখ টাকা দেন।

এরপরও বাদীর স্ত্রীর কাছে আবারও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন আরিফ। এতে উপায়ান্তর না পেয়ে শেষ পর্যন্ত স্বামীকে (বাদীকে) ঘটনাটি খুলে বলেন। বিষয়টি বাদী জানার পর আসামি আরিফকে তার মুঠোফোন ও ফেসবুক থেকে রিমুভ করেন এবং মেসেঞ্জার ডিজেবেল করে দেন, সেইসঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপেও নম্বরটি ব্লক করে রাখেন।  

কিন্তু গেলো বছরের ২৬ মার্চ একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে আরিফ আবারও বাদীকে ফোন করে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন এবং ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।

পরে বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (২০১৮ এর ২২-১, ২৬-১, ২৯-১) তিনটি ধারায় আসামি আরিফের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আজ এই রায় ঘোষণা করা হয়।

রায়ে আসামিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং তৃতীয় ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানা অনাদায়ে পৃথক তিন ধারায় ৬ মাস করে মোট ১৮ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে আসামিকে। এই সাজা একসঙ্গে চলবে বলে জানান আইনজীবী ইসমত আরা।

রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী আরও জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপর তিনটি ধারার অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামিকে ওই ধারাগুলো থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের অনুলিপি বগুড়ার চিফ জুডিসিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]