ছিল অদম্য ইচ্ছেশক্তি, শুধু বাধা ছিল পারিপার্শ্বিকতা। সেই পারিপার্শ্বিকতার মধ্যেই ছেলে মেহেদী হাসানের সঙ্গে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন মা মঞ্জুয়ারা খাতুন। কৃতিত্বের সঙ্গে পাসও করেছেন তিনি। মা ও ছেলের এমন সাফল্যে পরিবারে বইছে আনন্দের বন্যা।
সোমবার প্রকাশিত চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, মা মঞ্জুয়ারা খাতুন পেয়েছেন জিপিএ ৪.৮৯ এবং তার ছেলে মেহেদী হাসান পেয়েছে জিপিএ ৪.৯৩।
মন্জুয়ারা কারিগরি বোর্ডের অধীনে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের শামীমা জাফর মৎস্য ইনস্টিটিউট থেকে এবং ছেলে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ বিএম কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
তাদের বাড়ি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে। মঞ্জুয়ারার স্বামী অটো ভ্যানচালক আব্দুর রহিম। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে।
মঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, আমার পড়াশোনা করার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু নানা কারণে হয়ে উঠেনি। দুই বছর আগে খানমরিচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলাম। এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করি। আমার স্বামীও পড়াশোনায় সহযোগিতা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী অটোভ্যান চালিয়ে আমাদের সংসার ও লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছেন। এখন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা আরও বেড়ে গেল। সুযোগ পেলে আরও পড়াশোনা করতে চাই।
মায়ের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে পাস করায় ছেলে মেহেদী হাসানও উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, আমরা অনেক কষ্টের মধ্যেও পড়ালেখা চালিয়ে গেছি। আমার মা সংসারের কাজ করেছেন। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন এবং বেশ ভালো ফলাফল নিয়ে পাস করেছেন। এজন্য আমি অত্যন্ত খুশি।
মঞ্জুয়ারার স্বামী আব্দুর রহিম জানান, ‘স্ত্রী ও ছেলে এক সঙ্গে এসএসসি পাস করায় তিনি ভীষণ খুশি। পাসের খবর পেয়েই তিনি সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছেন। তার ইচ্ছা ছেলে-মেয়ের সাথে স্ত্রীর পড়াশোনাও চালিয়ে নিয়ে যেতে।’