ঈশ্বরদীতে নিজ কলেজের সিনিয়র শিক্ষককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে সলিমপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল আলমের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহকে অধ্যক্ষের কক্ষে পেটানোর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কলেজের শিক্ষক জানান, নিয়ম অনুযায়ী কলেজের শিক্ষকদের সকাল ১০টার মধ্যে কলেজে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে হয়। ১০টার পরে সহকারী অধ্যাপক রহমত উল্লাহ অধ্যক্ষের কক্ষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে যান। অধ্যক্ষ ওই শিক্ষককে দেরিতে আসার জন্য খাতায় অনুপস্থিত করেন। শিক্ষক রহমত উল্লাহ এ সময় অধ্যক্ষকে বলেন, 'বাড়িতে সমস্যা ছিলো আর যানজট থাকায় আসতে দেরি হয়েছে। আমার ক্যাজুয়েল লিভ পাওনা আছে, আমি ছুটির দরখাস্ত দিতে চাই। নাহলে আজকের জন্য খাতায় স্বাক্ষর করতে দেন।' এ কথা শোনার পর অধ্যক্ষ রবিউল ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
কলেজশিক্ষক আরও বলেন, রহমতউল্লাহ খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে অধ্যক্ষ আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এ সময় অধ্যক্ষ তাকে কিল-ঘুষি মারার পাশাপাশি লাথিও মারতে থাকেন। ফলে শিক্ষক রহমত উল্লাহ নিচে পড়ে যান। এক পর্যায়ে পাশের রুম থেকে তিনজন শিক্ষক ছুটে গিয়ে শিক্ষক রহমত উল্লাহকে উদ্ধার করেন। অধ্যক্ষের মারধরে ওই শিক্ষক রক্তাক্ত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক রহমত উল্লাহ ইত্তেফাককে বলেন, অধ্যক্ষ মাঝেমধ্যেই শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর আগে ১২ জুন এবং ২০১৭ সালেও আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। দেরিতে আসার জন্য অনুপস্থিত না করে ছুটির দরখাস্ত দিতে চেয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। অশালীন ভাষাই শুধু নয়, উনি আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত করেছেন। অধ্যক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় অন্যান্য শিক্ষকরা তার অন্যায় আচরণের বিচার পান না।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ রবিউল আলমের মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে ইত্তেফাককে বলেন, 'শিক্ষক অনিয়ম করলে চাকরিবিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু শিক্ষককে মারধর করা ভীষণ অন্যায়।' এই অন্যায়ের জন্য অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি এখনও অবগত নই। খোঁজখবর নিয়ে দেখব।