পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বিশৃঙ্খলার ভয়ে রাজধানী ইসলামাবাদের অভিমুখে 'লংমার্চ' প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন। ইমরান আরও ঘোষণা করেন, তার দল আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ দেওয়ার জন্য নতুনভাবে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করবে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শনিবার প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে এক জনসভায় স্বশরীরে যোগ দিয়ে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
শনিবার রাওয়ালপিন্ডির সমাবেশে ইমরান খান বলেন, আমি ইসলামাবাদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ আমি জানি, সেখানে বিপর্যয় ঘটবে এবং ক্ষতি হবে দেশেরই। তিনি বলেন, বিশৃঙ্খলা পাকিস্তানের স্বার্থে হবে না কারণ দেশটি অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হচ্ছে।
ইমরান খান এবং তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণের পর থেকে সরকারকে আগাম নির্বাচনের জন্য চাপ দেয়ার জন্য দেশব্যাপী বিক্ষোভ করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইমরানের নেতৃত্বে গত ২৮ অক্টোবর ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে পিটিআই। তবে গত ৩ নভেম্বর পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদ শহরে লংমার্চ চলাকালে ইমরানের ওপর হামলার পর লংমার্চ স্থগিত করা হয়। এই ঘটনায় তার পায়ে ৪টি গুলি লাগে। হামলায় পিটিআইয়ের এক সমর্থক নিহত সহ আহত হন দলটির বেশ কয়েক নেতা-কর্মী। এ ঘটনার পর ১০ নভেম্বর আবারও লংমার্চ শুরু হয়।
শনিবার রাওয়ালপিন্ডিতে সমাবেশে অংশ নিয়ে ইমরান বলেন, আমরা ইসলামাবাদ অভিমুখে আর লংমার্চ করবে না। বিপরীতে আমরা সমস্ত অ্যাসেম্বলি ত্যাগ করার এবং এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ইমরান বলেন, পিটিআই ইতিমধ্যেই ফেডারেল পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছে তবে দুটি প্রদেশ এবং দুটি প্রশাসনিক ইউনিট, গিলগিট-বালতিস্তান এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে ক্ষমতায় রয়েছে। সেখান থেকেও পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খানের পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুনখোয়া রাজ্যের অ্যাসেম্বলি থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য ছিল দ্রুত নির্বাচন আহ্বান করার জন্য সরকারকে চাপ দেয়া। এখন বাকি প্রাদেশিক পরিষদের অবলুপ্তির মধ্য দিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে। তখন আর দেশটিতে আগাম নির্বাচন না দেয়া ছাড়া অন্য উপায় থাকবে না। গত এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে এই দাবিই জানিয়ে আসছেন ইমরান খান।