ব্রাজিলীয়দের হৃদয় মহাসাগরের মতো। যাঁকে ভালবাসবে, তাঁকে মনপ্রাণ সঁপে দেবে। সাওপাওলো থেকে বুধবার সকালেই কাতারে পৌঁছেছেন ব্রাজিলীয় দম্পতি জুয়ান ও মেরিলিন ওলিভিয়েরা। সদ্য দু’জনে ভালবেসে বিয়ে করেছেন। মেরিলিন সবেমাত্র ব্যাঙ্ক ডু ব্রাজিলে চাকরি পেয়েছেন। নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েই বিশ্বকাপে জাতীয় দলকে সমর্থন করতে কাতারে চলে এসেছেন।
জুয়ান এখনও বেকার, ভাল কোনও চাকরি পাননি। মেরিলিন বলেছেন, ‘‘আমি তো চাকরি করি, তুমি শুধু ঘরে থেকে আমাদের বাচ্চাদের মানুষ করবে, তা হলেই হবে। আমি বাকিটা বুঝে নেব।’’
মেরিলিনকে দেখতে টেনিসের স্টেফি গ্রাফের মতো, আর জুয়ানের সঙ্গে খুঁজে পাই ইস্টবেঙ্গলে একসময় খেলতে আসা গিলমারকে। এদিন সন্ধ্যায় কাতারের বিন হামাদ স্টেডিয়ামে ব্রাজিল দলের প্রস্তুতি দেখতে হাজির ওই দম্পতি। তাঁদের পাশে সেইসময় সবাই চিৎকারে করে নাচছে, মেসি চাও, মেসি চাও, পর্তুগিজে চাও শব্দের অর্থ, বিদায়। বোঝাতে চাইছেন, মেসি বিদায় নিয়েছেন আসর থেকে, এবার আমাদের মাঠে নামার পালা।
ব্রাজিলীয়রা কোনও শহরে যোগ দিলে সেখানে একটা ছন্দময়তা তৈরি হয়। কাতারের মতো আবেগবর্জিত শহরকে তারা এসেই আপন করে নিয়েছেন। মেট্রো স্টেশনগুলিতে এতো নিরাপত্তার মধ্যেও তাঁরা যেভাবে ওলে, ওলে… বলে গান গাইছেন, কেউ বলতেও পারবেন না আইন ভাঙছেন। তাঁরা ফুটবল নিয়ে আনন্দ করতে জানেন। সেই জন্যই সব দেশের ভালবাসাও নিতে জানেন।
নেমার, স্যান্টোস, ভিনিসিয়াসরা সেইসময় আল আরবি স্পোর্টস ক্লাবের মাঠে প্রস্তুতি সারছেন। আর পাশের মাঠেই গান গাইছেন ব্রাজিলীয় সমর্থকরা। কাতার শহরে নানা ফ্যান জোনে থাকা, আর ব্রাজিল দলের সঙ্গে থেকে আনন্দ করা এক বিষয় নয়। গ্র্যাবিয়েল নামে এক তরুণীর হাতে ঢোল, তিনিও বাজাচ্ছেন, আর গান গাইছেন।
সার্বিয়ার বিপক্ষে বৃহস্পতিবার ব্রাজিল দলের মাঠে নামার আগে তাদের দেশের সমর্থকরা ইতিমধ্যেই হাজির। আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে সৌদির কাছে হারের পরেও সাম্বা সমর্থকরা অকুতোভয়। তাঁরা বরং রাজার মতো অভিযান শুরুর কথা ভাবছেন। ব্রাজিল যে হারতে জানে না, সেটাই বোঝা যাচ্ছে ব্রাজিলীয় সমর্থকদের অন্দরমহলে ঢুঁ মেরে।