মেয়েকে খুন করে স্যুটকেসে ভরে ফেলে দিল বাবা !


তমাল দাস : , আপডেট করা হয়েছে : 21-11-2022

মেয়েকে খুন করে স্যুটকেসে ভরে ফেলে দিল বাবা !

মা-বাবার অমতে ভিন্ন জাতের ছেলেকে বিয়ে করেছিলেন। তা নিয়ে তুমুল তর্কাতর্কির সময় মেয়েকে গুলি করে খুন করেন বাবা। এর পর মেয়ের দেহ স্যুটকেসে ভরে গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেন মথুরার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে। সোমবার এমনই দাবি করল মথুরা পুলিশ। মেয়ের খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই তরুণীর মা-বাবাকে গ্রেফতার করেছে তারা।

মথুরার পুলিশ সুপার অভিষেক যাদব জানিয়েছেন, শুক্রবার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে স্যুটকেসবন্দি আয়ুষী চৌধুরী (২১)-র খুনের কিনারা করে ফেলেছেন তাঁরা। পরিবারের ‘সম্মানরক্ষায়’ মেয়েকে খুন করেছেন তাঁর বাবা নীতেশ যাদব। এতে পরিবারের আরও দুই সদস্য জড়িত বলেও দাবি পুলিশের। ইতিমধ্যেই আরুষীর মাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ১৮ নভেম্বর, শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মথুরা এলাকায় একটি লাল রঙের বড়সড় স্যুটকেস পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন কয়েক জন শ্রমিক। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই স্যুটকেসের ভিতর থেকে প্লাস্টিকে মোড়া এক তরুণীর দেহ উদ্ধার করে। মুখ রক্তাক্ত, গোটা শরীরে মারধরের চিহ্ন, বুকে গুলির ক্ষত— যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোডে এগ্রিকালচারাল রিসার্চ সেন্টারের কাছে উদ্ধার করা স্যুটকেসে এ ভাবেই মিলেছিল ওই তরুণীর দেহ।

এই ঘটনার তদন্তে ৮টি দল গঠন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে মথুরা পুলিশ। তদন্তে নেমে ওই স্যুটকেসটি খতিয়ে দেখা বা সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শুরু করে সমাজমাধ্যমেও বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট দেখতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। এমনকি, ওই তরুণীকে চিহ্নিত করতে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও সাঁটানো হয়। এর দু’দিন পর রবিবার সকালে এক অজ্ঞাতপরিচয়ের থেকে ফোন পেয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, দেহটি দক্ষিণ দিল্লির বদরপুরের বাসিন্দা আরুষী চৌধুরীর।

আয়ুসীর দেহ শনাক্তকরণের জন্য দিল্লিতে তাঁর বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, আয়ুষীর বাবা নীতেশ বাড়ি থেকে গায়েব। এর পর তাঁর মা এবং ভাইকে নিয়ে মথুরায় পৌঁছন তদন্তকারীরা। পরে তাঁর খোঁজ মিলতেই নীতেশকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ওই তিন জনকে সঙ্গে নিয়ে আয়ুষীর দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। সে সময় আয়ুষীর বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, ১৭ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার আয়ুষীকে খুন করেন তাঁর বাবা। ঘটনার আগে বেশ কিছু দিন বাড়ির বাইরে ছিলেন বিসিএ পড়ুয়ার আয়ুষী। অভিযোগ, পরিবারকে অন্ধকারে রেখে ছত্রপাল চৌধুরী নামে এক ভিন্‌ জাতের ছেলেকে বিয়ের পর থেকে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। বাড়ি ফেরার পর এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তুমুল ঝামেলা হয় আয়ুষীর। তর্কাতর্কির সময় নিজের লাইসেন্সড বন্দুক দিয়ে আয়ুষীকে খুন করেন বাবা। এর পর মেয়ের দেহ প্লাস্টিকে মুড়ে স্যুটকেসে ভরে ফেলেন। এ কাজে নীতেশকে সাহায্য করেন আয়ুষীর মা। নীতেশ নিজেই গাড়ি চালিয়ে মেয়ের স্যুটকেসবন্দি দেহ ফেলে আসেন মথুরার যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ১৭ নভেম্বর থেকে আয়ুষী বাড়ি থেকে গায়েব থাকলেও পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়নি। তা নিয়েই খটকা লাগে। এর পর ঘটনাক্রম সাজাতেই সন্দেহের তালিকায় উঠে আসেন নীতেশ।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]