দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যানসহ পাঁচ শিক্ষককে পানি খাওয়ার গ্লাস দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে একই বিভাগের পিয়ন। হামলাকারী পিয়ন তাজুল ইসলামকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পিয়ন তাজুল ইসলাম অতর্কিতভাবে একই বিভাগের শিক্ষকের ওপর হামলা চালায়। আহত শিক্ষকরা এখন দিনাজপুরে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
আহত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক রোকনুজ্জামান রনি, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন, প্রভাষক নির্মল চন্দ্র রায়, প্রভাষক হারুনুর রশিদ এবং সদ্য যোগদানকারী প্রভাষক মাহবুব রহমান।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক রোকনুজ্জামান রনি বলেন, বুধবার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফরের কথা ছিল। এই শিক্ষা সফরে ছাত্রছাত্রীদের সাথে দুজন শিক্ষকও যাওয়ার কথা ছিল। তাই সকাল নয়টার সময় সব ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক উপস্থিত হলেও অফিস পিয়ন তাজুল ইসলাম বিলম্ব করেন। আমি নিজেই অফিসপিয়ন তাজুলকে মোবাইল ফোনে তাড়াতাড়ি অফিসে আসার জন্য নির্দেশ প্রদান করি। কিন্তু তিনি মোবাইলেই আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে মোবাইলের লাইন কেটে দেন। কিছু সময় পর তাজুল অফিসে আসলে তাকে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে প্রথমেই সদ্য যোগদানকারী শিক্ষক মাহবুব রহমানের মাথায় পানি খাওয়ার গ্লাস দিয়ে আঘাত করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় শিক্ষক কক্ষে পড়ে যান। অন্যান্য শিক্ষকরাও এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এলোপাথাড়ি পানি খাওয়ার গ্লাস দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। আমি নিজে এগিয়ে আসলে আমার ওপর হামলা করেন। এতে আমার ঠোঁট ফেটে যায়। আরও চারজন শিক্ষক মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। রক্তাক্ত অবস্থায় শিক্ষকদের উদ্ধার করে প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষকদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দিনাজপুরে আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক মফিজুল ইসলাম জানান, এর আগেও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অফিস পিয়ন তাজুল ইসলাম এক শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল। সেই সময় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। গত কয়েক মাস ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সে আসলেই মানসিক সমস্যায় ভুগছে বলে আমার মনে হয়েছে। আজকে যে পাঁচ শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই। এই কর্মচারীকে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার তৌহিদুর রহমান তৌহিদ জানান, আহত পাঁচ শিক্ষককে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তাদের চারজন মাথায় এবং একজন ঠোঁটে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাদেরকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তারা আগের তুলনায় সবাই সুস্থ আছেন।