মাদারীপুর সদর উপজেলায় ফরিদা বেগম (১৬) নামের এক কিশোরীকে হত্যা মামলায় ১৪ বছর পরে প্রেমিক শহিদুল মোল্লাকে (৪২) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত শহিদুল মোল্লা সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদী এলাকার মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, শহিদুল মোল্লার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মহিষেরচর এলাকার আব্দুল করীম কারীর মেয়ে ফরিদা বেগমের। ২০০৮ সালের ৬ মে সকালে ফরিদা বেগম শহিদুল মোল্লার সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। ৭ মে সকালে কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ ধুয়াসার এলাকার কাদের কবিরাজের পেপে বাগান থেকে ফরিদার মৃতদেহ উদ্ধার করে কালকিনি থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ভাই হান্নান কারী ওই দিন বিকেলে শহিদুল মোল্লা ও অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে কালকিনি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কালকিনি থানার পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ হারুনর রশীদ ঘটনার তদন্তের পর ২০০৯ সালের ২২ জুন আসামি শহিদুল মোল্লাকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। বিচারিক আদালতে দীর্ঘ ১৪ বছর যুক্তিতর্ক শেষে উপযুক্ত সাক্ষী-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে শহিদুল মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করলেন।
মামলার বাদী ও নিহতের ভাই হান্নান কারী বলেন, আজ ১৪ বছর পর আমার বোনকে হত্যা রায় পেলাম। আদালতের এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আদালতের কাছে একটাই দাবি, রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, আসামি শহিদুল মোল্লা প্রতারণার মাধ্যমে ভিকটিমকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ে করেনি। পরে ভিকটিমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছি শহিদুল মোল্লা তার প্রেমিকাকে হত্যা করেছেন। আজ বিজ্ঞ আদালত আসামি শহিদুল মোল্লাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। এ রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।