রবিবার ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হন ভারতরত্ন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা ভারতে। বলিউডে দশকের পর দশক নায়িকার কন্ঠ ছিলেন তিনি। ভারতীয় সিনেমায় প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসাবে জার্নি শুরু করেছিলেন মাত্র ১৩ বছর বয়সে। কিছুদিনের মধ্যেই বাবাকে হারিয়ে পুরো পরিবারের দায়িত্ব নেন লতা। তাঁর প্রথম উপার্জন ছিল ২৫ টাকা।
ধীরে ধীরে বলিউডে বিস্তার করেছেন তাঁর সাম্রাজ্য। গানের রয়্যালটি থেকেই মাসে ৪০ লক্ষ টাকা আয় করতেন লতা মঙ্গেশকর। সবমিলিয়ে বছরে প্রায় ৫ কোটি ছিল তাঁর উপার্জন। দক্ষিন মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকায় অবস্থিত তাঁর বাড়ি 'প্রভাকুঞ্জ'। সেই বাড়ির গ্যারাজেই দেখা যায় বেশ কয়েকটি অভিজাত গাড়ি। বুইক, শার্ভোলেট, বেন্টলি ফ্লাইং স্পার এই তিনটি গাড়ির পাশাপাশি সেখানে রয়েছে একটি মার্সিডিজ যেটি বীরজারা ছবির পর তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন যশ চোপড়া। রিপোর্ট অনুযায়ী লতা মঙ্গেশকরের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ৩৭০ কোটি টাকা।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ইনদোরের এক সংগীত পরিবারে জন্ম হয় লতা মঙ্গেশকর। বাবা পণ্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন মারাঠি সংগীত জগতের সুবিখ্যাত ধ্রুপদী গায়ক। বাবার থেকেই প্রথম তালিম নেওয়া। ১৯৪৫ সালে মুম্বইয়ে পাড়ি দেন তিনি। ১৩ বছর বয়সেই প্রথম বার সিনেমায় গান গাওয়া। মরাঠি ছবিতে। মুম্বই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে প্রথম হিন্দি ছবি ‘মজবুর’-এ গান। পরবর্তীতে আয়েগা আনেওয়ালা, প্যার কিয়া তো ডরনা কেয়া, আল্লা তেরো নাম, কঁহি দীপ জ্বলে – ছয় ও সাতের দশকে এসব গান জনপ্রিয়তার যে শিখর ছুঁয়েছিল, তা আজও অম্লান। ভারতের ৩৬ টি আঞ্চলিক ভাষাতে ও বিদেশি ভাষাতে গান গাওয়ার রেকর্ড একমাত্র তাঁরই। এত দীর্ঘ সময়ে নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মতো বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মানে তাঁর ঝুলি ভরা রয়েছে।
রাজশাহীর সময় / এম জি