গুলি-হামলার জন্য গতকালই পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল ইমরান খানের দল। নিশানা করেছিল গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-কেও। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার শাহবাজকে নিশানা করলেন খোদ ইমরানই। প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই ষড়যন্ত্রে জড়িত অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লা ও আইএসআইয়ের একাংশও।
পাকিস্তানে ফের ভোট চেয়ে লাহোর থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত ‘লং মার্চ’ শুরু করেছে ইমরানের দল। সেই শোভাযাত্রার সময়েই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়াজিরাবাদে ইমরানকে গুলি করে এক যুবক। আহত হয়েছেন আরও ইমরানের ট্রাকের উপরে থাকা আরও কয়েক জন। লাহোরের শওকত খান্নুম হাসপাতালে ইমরানের চিকিৎসক ফয়সল সুলতান জানান, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অবস্থা স্থিতিশীল। তার দু’পায়ে বুলেটের অংশ রয়েছে।
পরে এক ভিডিয়ো বার্তায় ইমরান জানান, তাকে চার জন খুনের ষড়যন্ত্র করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লা এবং আইএসআইয়ের কর্তা মেজর জেনারেল ফয়সল নাসির। ইমরানের দাবি, ‘‘আমি আগের দিনই জানতে পেরেছিলাম আমাকে ওয়াজিরাবাদ বা গুজরাটে খুন করার চেষ্টা হবে। সেখানে ২ জন খুনি আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছিল। প্রথমে আমাকে লক্ষ্য করে এক দফা গুলি চালানো হয়। তার পরে আমি পড়ে যাই। তার পরে দ্বিতীয় দফার গুলিবৃষ্টি হয়। কিন্তু আমি পড়ে যাওয়ার ফলে সম্ভবত এক জন হত্যাকারী ভাবে যে আমি মারা গিয়েছি। ফলে সে পালায়।’’ পাক সেনার সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ও পাক বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ স্তরকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন ইমরান। ইমরানের অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ইমরানের কড়া সমালোচনা করেছেন।
ইমরানের দলের তরফে জানানো হয়, ইসলামাবাদের দিকে যাত্রা চলবে। ইমরানের দাবি না মেটা পর্যন্ত চলবে বিক্ষোভ। আজ করাচির শারিয়া ফয়সল এলাকায় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা মেট্রোপোল এলাকায় পৌঁছানোর সময়ে বাহিনী বাধা দেয়। অন্য দিকে ইসলামাবাদের ফৈজাবাদ এলাকায় বিক্ষোভকারীরা যান চলাচল বন্ধ করে দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেখানেও সংঘর্ষ হয় দু’পক্ষের।
গতকাল হামলার সময়ে ভিড়ের মধ্যে এক যুবক হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। যুবকের নাম এখনও জানা যায়নি। তবে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি আততায়ীকে গুলি ছুড়তে দেখেছিলাম। যাতে সে ফের গুলি ছুড়তে না পারে সে জন্য আমি তাকে আঘাত করি। সে আগ্নেয়াস্ত্র ফেলে পালাতে শুরু করে। তাড়া করে তাকে ধরে ফেলি। আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি খান সাহেবের ক্ষতি কেউ করতে পারবে না।’’ টুইটারে রক্ষাকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইমরানের প্রাক্তন স্ত্রী জেমাইমা। তিনি লিখেছেন, ‘‘ইমরানের ছেলেদের হয়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’ ঘটনার নিন্দা করেছেন ইমরানের আর এক প্রাক্তন স্ত্রী রেহাম খানও।
ইমরানের উপরে হামলাকারীর দাবি, নমাজের সময়ে শোভাযাত্রা করার জন্য সে ইমরানকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে। ইমরান দেশকে ভুল পথে চালিত করছেন। এই ষড়যন্ত্রে আর কেউ যুক্ত নেই। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ আরও দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে।