মানবদেহের তীব্র বেদনাদায়ক এবং জটিল রোগগুলোর মধ্যে অর্শ বা পাইলস হলো একটি। এটি মানুষের মলদ্বারের রোগ। এ রোগে মলদ্বারের ভেতরে বা বাইরে, চারপাশে বা একপাশে, একটি বা একাধিক, গোলাকৃতি বা সুচাল গুটিকা দেখা দেয়। এ গুটিকাগুলোকে বলি বা গেজ বলা হয়। পায়খানা করার সময় এগুলো থেকে রোগী ভেদে অল্প কিংবা বেশি রক্ত যায়। এ সমস্যার জন্য সবচেয়ে ভালো হল ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া।
তবে ঘরোয়া কিছু উপায় আছে যেগুলো অনুসরণ করলে পাইলস রোগ প্রতিরোধ বা উপশমে সহায়তা করে।
র্যাডিশ জুস: র্যাডিশ হল মূলা ঘরানার একটি সবজি। এই সবজি পাইলসের সমস্যায় অত্যন্ত উপকারি। এই সবজির রস খেলে উপকার পাবেন। প্রথমে ১/৪ কাপ দিয়ে শুরু করুন। তারপর পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়িয়ে ১/২ কাপে নিয়ে আসুন।
বেদানা: বেদানার দানা ভালো করে ফোটান। যতক্ষণ না বেদানার দানা ও পানির রং বদলাচ্ছে ততক্ষণ ক্রমাগত ফুটিয়ে যান। এই পানি ছেঁকে রেখে দিন। দিনে দুবার করে এই পানি খান।
ডুমুর: শুকনো ডুমুর এক গ্লাস পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে এই অর্ধেক পানি খেয়ে নিন। আবার বিকেলের দিকে বাকি অর্ধেক পানি খেয়ে নিন।
আদা ও লেবুর রস: ডিহাইড্রেশনও পাইলসের অন্যতম কারণ। আদা ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে তাতে ১ চামচ মধু ভাল করে মিশিয়ে নিন। দিনে দুবার করে এই মিশ্রণটি খান। এতে শরীর হাইড্রেট হবে এবং পাইলসের সমস্যাও কমবে।
কাঁচা পেঁয়াজ: পাইলসের কারণ যে মলদ্বার থেকে রক্ত পরার সমস্যা তৈরি হয়, কাঁচা পেঁয়াজে সে সমস্যা অনেকটাই কমে। অন্ত্রের যন্ত্রণা প্রশমিত করতেও সাহায্য করে।
প্রাতঃকর্মের সময় বসার ধরণ: অনেকসময় ভুল পদ্ধতিতে কমোডে বসার ফলে অতিরিক্ত চাপের প্রয়োজন হয়। পায়ের নিচে একটা ছোট টুল রাখুন। কমোডে বসার সময় একটু সামনের দিকে ঝুঁকে বসুন। এতে বৃহদন্ত্রের কম চাপ পড়বে।
ব্যায়াম: কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা কমাতে ও শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। তবে যদি খুব পরিশ্রম করেন বা ভার উত্তোলন করেন তাহলে পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে। সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানোর মতো হাল্কা ওয়ার্কআউট করুন।
হলুদ: কাঁচা হলুদ পানিতে ফোটান ভাল করে। আর এই পানি নিয়মিত খান। এতে পাইলসের সমস্যায় অনেকটা উপকার পাওয়া যায়।
কলা: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সবচেয়ে উপকারি এবং অব্যর্থ ওষুধ হল কলা। বিনা কষ্টে মলত্যাগ করতে সাহায্য করে কলা। এর ফলে মলদ্বারে কোনও চাপ পড়ে না, ফলে পাইলসের সমস্যা বৃদ্ধি হয় না। কলা সোয়াবিনের দুধ দিয়ে খেলে আরও তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যাবে।
ডাল: মসুর ডাল, খেসারি ডাল, তিসির ডাল, এই ধরনের খাবার পাইলসের সমস্যা নিরাময়ে খুবই উপকারি।
রাজশাহীর সময় /এএইচ