দেশে প্রশিক্ষিত যুবশ্রেণির ডাটাবেইজ তৈরির কাজ চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডেটাবেইজের কাজ শেষ হলে, কর্মসংস্থানের বাইরে থাকা যুবকদেরও কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হবে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় যুব দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, আত্মকর্মসংস্থানে প্রতিষ্ঠিত যুবকরা ভূমিকা রাখছে দেশের অর্থনীতিতে। খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে আসন্ন দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুব সমাজকে শক্তিতে পরিণত করতে কাজ করছে সরকার।
আগামী বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুবকরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে যুবকরাই অস্ত্র হাতে নিয়েছিল। আমরা বীরের জাতি। আমাদের বীরের জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে চলতে হবে। কারও কাছে মাথা নত করা যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালীন সময়ে আমি দেখেছি, চিকিৎসাসেবা থেকে শুরু করে যুবকরাই সব কাজে এগিয়ে এসেছে। এটা কিন্তু গর্বের বিষয়। নতুন নতুন আবিস্কারে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এটা আমাদের যুবকরাই করবে। আমাদের যুবকরা এতো বেশি মেধাবী, তারা সব কাজে অবদান রাখতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব উন্নয়ন কেন্দ্র লেখা থাকে জাতীয় যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রতিষ্ঠানে। সেখানে আমি নিজে গিয়েছিলাম দেখেছিলাম দুর্বস্থার চিত্র। সরকার গঠন করে সেগুলোকে আমরা উন্নতি করেছি। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পর্যায় পর্যন্ত যুবকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। তারা নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তাদের সফলভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যাতে হয় সেদিকে আবার বিশেষভাবেই নজর রাখছি।
সরকারপ্রধান বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে এদেশে লাখো মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে যুবকরা জাতির পিতা ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযোদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল যুবকরা। সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে লাল-সবুজের একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে এ দেশের যুবসমাজ। যুবদের তিনি সংগঠিত করেছিলেন দেশপ্রেমের মহান দীক্ষায়। জাতির পিতা স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠনেও যুবসমাজকে কাজে লাগান এবং শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন ও রূপরেখা প্রণয়ন করেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশের যুবসমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা চালায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে সরকার যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত করতে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ হাসান রাসেল অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আজহারুল ইসলাম খান।