‌‌দান করবেন কাকে? জেনে নিন


ধর্ম ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 01-11-2022

‌‌দান করবেন কাকে? জেনে নিন

দান সাদকার ক্ষেত্রে নিজের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীকে প্রাধান্য দিতে হয়। আর সম্পদ ব্যয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ খাত হচ্ছে বাবা ও মা। আত্মীয়দের মধ্যে ভাই-বোনের হক সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি বৈবাহিক সূত্রের শ্বশুর–শাশুড়িসহ অন্যান্য আত্মীয়রাও অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্তু দান করবেন কাকে? এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। কী সে উত্তর?

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘উত্তম সাদকা হলো তা, যা দান করার পর মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে (মানুষের স্বাভাবিক চাহিদা থাকে না)। নিচের হাত থেকে উপরের হাত উত্তম। (তিনি আরো বলেন) যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্বে আছে তাদের আগে দাও। (কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নতুবা তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে আমাকে খাবার দাও। আমাকে তুমি কার কাছে ছেড়ে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞাসা করল হে আবু হুরায়রা! এ হাদিস আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেন, এটি (হাদিসটি) আবু হুরায়রার থলে থেকে (পাওয়া) নয়, (বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে)।’ (বুখারি)

দান করবন কাকে? এ প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ তাআলা ঘোষনা করেন-

وَ اٰتِ ذَاالۡقُرۡبٰی حَقَّهٗ وَ الۡمِسۡکِیۡنَ وَ ابۡنَ السَّبِیۡلِ وَ لَا تُبَذِّرۡ تَبۡذِیۡرًا

‘তুমি আত্মীয়-স্বজনকে তার প্রাপ্য প্রদান কর এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। আর কিছুতেই অপব্যয় করো না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ২৬)

কোরআনুল কারিমের এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দরিদ্র আত্মীয়-স্বজন, মিসকিন এবং অভাবী মুসাফিরদের সাহায্য করে তার উপর অনুগ্রহ প্রকাশ করা উচিত নয়। যেহেতু এটা তাদের প্রতি অনুগ্রহ নয়, বরং এটা হলো মালের সেই অধিকার, যা মহান আল্লাহ ধনীদের ধন-সম্পদে উল্লিখিত অভাবীদের জন্য নির্ধারিত করেছেন।

ধনী যদি এ অধিকার আদায় না করে, তবে সে আল্লাহর কাছে অপরাধী গণ্য হবে। অর্থাৎ, এটা হলো অধিকার আদায় করা, কারো উপর অনুগ্রহ করা নয়।

আর আত্মীয়-স্বজনদের কথা প্রথমে উল্লেখ করে এ কথা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে, তাদের অধিকার বেশী ও প্রাধান্য পাওয়ার যোগ্য। আত্মীয়-স্বজনদের অধিকারসমূহ আদায় এবং তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করাকে আত্মীয়তার সম্পর্ক জোড়া (বা জ্ঞাতিবন্ধন বজায় রাখা) বলা হয়। এর উপর ইসলামের বড়ই গুরুত্ব রয়েছে। (আহসানুল বয়ান)

মনে রাখতে হবে আলোচ্য আয়াতে সকল আত্মীয়দের হক বর্ণিত হয়েছে যে, প্রত্যেক আত্মীয়ের হক আদায় করতে হবে। অর্থাৎ কমপক্ষে তাদের সঙ্গে সুন্দরভাবে জীবনযাপন ও সদ্ব্যবহার করতে হবে। যদি তারা অভাবগ্ৰস্ত হয়, তবে সামৰ্থ্য অনুযায়ী তাদের আর্থিক সাহায্যও এর অন্তর্ভুক্ত।’ (ফাতহুল কাদির)

আয়াতে আরও বর্ণিত হয়েছে- আত্মীয়দের হক, মিসকিনের হক এবং মুসাফিরের হক। এ তিনটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ নিজের উপার্জন ও ধন-দৌলত শুধুমাত্র নিজের জন্যই নির্ধারিত করে নেবে না। বরং ন্যায়সংগতভাবে ও ভারসাম্য সহকারে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করার পর নিজের আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও অন্যান্য অভাবী লোকদের অধিকারও আদায় করবে।’ (তাফসিরে জাকারিয়া)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আয়াতে উপর আমল করে সামর্থ্য অনুযায়ী দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]