বিরল জিনগত রোগ কিশোরের সারা শরীরে পোড়া কাঠের মতো কালো হয়ে উঠছে। হাতে পায়ে জোর নেই, হারিয়ে যাচ্ছে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাও। তার সারা শরীর আস্তে আস্তে মৃত গাছের মতো হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রিপন দাস। জন্মের পর থেকেই এক বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত সে। মাত্র ৩ মাস বয়সেই তার হাত-পা থেকে গাছের শিকড়ের মতো দেখতে এক ধরনের জিনিস বের হতে থাকে। সারা শরীর ক্রমশ গাছের গুঁড়ির মতো হয়ে উঠতে থাকে।
চিকিৎসকরা সব দেখে জানান, বিরল অসুখ ‘ট্রি ম্যান সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত রিপন। ২০১৬ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয় রিপনকে। সেখানে ৩টি অস্ত্রোপচার হয় তার। তারপর একটু একটু করে সুস্থ হতে শুরু করে রিপন। ২০১৮ সালে স্কুলেও ভর্তি হয় সে। দিব্যিই পড়াশোনা চলছিল তার। সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধুলোতেও অংশ নিচ্ছিল রিপন।
সমস্যা আবার ফিরে আসে মাস দুয়েক আগে। তবে এবার অন্য রূপে। সে সময় একবার জ্বর আসে তার। জ্বর থেকে ওঠার পরেই শিকড় গজানো নয়, বরং রিপনের সারা শরীর পোড়া কাঠের মতো কালো হয়ে যেতে শুরু করেছে। এই সমস্যা থেকে রিপন আদৌ সুস্থ হবে কিনা, তা চিকিৎসকরাও বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁদের দাবি, কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে রিপনের। তাঁদের অনুমান, স্থানীয় কবিরাজের কাছ থেকে কোনও ওষুধ নিয়ে গায়ে লাগানোর কারণেই এই নতুন অসুখ।
একটি কুঁড়ে ঘরে থাকে রিপন ও তার বাবা মা। টাকা খরচ করে নামীদামি জায়গায় চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য তাঁদের নেই। তাই তাঁদের কাতর আবেদন, কেউ যদি ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তাহলেই হয়তো ছোট্ট রিপন আবার আগের মতোই হাসবে খেলবে, স্কুলে যাবে। সেই আশাতেই এখন বুক বাঁধছেন বাংলাদেশের ‘ট্রি-ম্যান’-এর বাবা মা।