স্বামী এবং স্ত্রী একই দ্বীনভুক্ত হওয়া আল্লাহর একান্ত রহমত। মহান আল্লাহর বাণী, ‘তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানুষ, এরপর মানুষকে করেছেন বংশ সম্পর্কীয় (আত্মীয়) ও বিবাহ সম্পর্কীয় (আত্মীয়), তোমার প্রতিপালক সব কিছু করতে সক্ষম।’ (সুরাহ আল-ফুরকান : আয়াত ৫৪)
বিয়ের মাধ্যমে দাম্পত্য জীবনে মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একজন নারীর ৪টি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিয়ের জন্য উপদেশ দিয়েছেন। একজন পুরুষের জন্য কন্যা নির্বাচনে ৪ বিষয়ের ওপর নজর রাখা জরুরি। আর এর মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে দ্বীনদারি। হাদিসে পাকে এভাবে এ নির্দেশনা দিয়েছেন নবিজি-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদের বিয়ে করা হয়-
১. তার সম্পদ;
১. তার বংশমর্যাদা;
৩. তার সৌন্দর্য ও
৪. তার দ্বীনদারী।
সুতরাং তুমি দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (বুখারি ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, মুসনাদে আহমাদ ৯৫২৬)
যে নারীকে বিয়ে করা অগ্রগণ্য
হাদিসের আলোকে যে সব কারণে একজন পুরুষ একটি মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করার জন্য উৎসাহিত ও আগ্রহান্বিত হতে পারে তা হচ্ছে চারটি। সৌন্দর্য, সম্পদ, বংশ ও দ্বীনদারী। এ গুণ চারটির মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ করা হয়েছে দ্বীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। আর এ গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সবার আগে গণ্য এবং সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ নির্দেশের মূলকথা হলো- দ্বীনদারীর গুণসম্পন্না মেয়ে পাওয়া গেলেই যেন তাকে স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়। তাকে (দ্বীনদারি নারী) বাদ দিয়ে অপর কোনো গুণসম্পন্না মেয়েকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া (পুরুষের জন্য) উচিত নয়। (সুবুলুস সালাম)
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- বিয়ের জন্য কোন ধরনের মেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন, যে স্ত্রীকে দেখলে সে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হয় তা সে যথাযথ পালন করে এবং তার নিজের স্বামীর ধন মালের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের বিপরীত কোনো কাজই করে না- (মুসনাদে আহমাদ)
চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি কেবল যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা-ই নয়, এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য গুণ যতই থাক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ের জন্য সে অগ্রাধিকার যোগ্য মেয়ে নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস অনুযায়ী তো দ্বীনদারীর গুণ বঞ্চিতা নারী বিয়ে করাই উচিত নয়।
নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না; কেননা এরূপ সৌন্দর্যই অনেক সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না, কেননা এ ধনমাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে বিয়ে করবে। বস্তুত (বিয়ের জন্য) একজন দ্বীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভালো।’ (ইবনে মাজাহ, বাযযার, বায়হাকি)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব অবিবাহিত যুবককে হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।