শেষ যাত্রায় ভক্তের ঢল, কাছের মানুষ, বিটাউন সেলেব থেকে রাজনৈতিক নেতামন্ত্রী, সকলে মিলে এদিন সামিল লতা মঙ্গেশকরের অন্তীম যাত্রায়।
রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালেই সকলকে কাঁদিয়ে চির নিদ্রায় লতা মঙ্গেশকর। দিনভর সকলের শোকবার্তায় ভরে উঠছে নেটদুনিয়া, রাষ্ট্রীয় সম্মানে হবে শেষ কৃত্য। মরদেহ শিবাজি পার্কের পথে।
এদিন দুপুর ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত প্রভূকুঞ্জের বাড়িতে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে লতা মঙ্গেশকরকে। এবার অন্তিম যাত্রায় লতা মঙ্গেশকর। সন্ধ্যা ৬টার সময় লতা মঙ্গেশকরকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে শেষশ্রদ্ধা জানানো হবে। হবে শেষকৃত্য।
করোনার সঙ্গে লড়াই করে জয় লাভ করেছিলেন তিনি, তবে বার্ধক্য জণিত কারণে শরীরের শক্তি ক্ষয় হয়, শেষে কঠিন লড়াই করে মাল্টি ওর্গান ফেলিয়রের কারণে প্রয়াত হন ভারতের সুর-সম্রাজ্ঞী। এদিন খবর সামনে আসা মাত্রই বিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের বাইরে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা, গ্রীন করিডোর করেই তাঁর পার্থিব দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রভূকুঞ্জ অর্থাৎ লতা মঙ্গেশকরের বাড়িতে।
অ্যাম্বুলেন্স-সহ কনবয়ের ঢল, পাপরাজিৎরাও শ্রোদ্ধেয় লতাজির প্রতিক্ষায় ভিড় জমিয়েছিলেন হাসপাতালের বাইরে। পার্থিব শরীর রাখা হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরের বাড়িতে। হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া সময় সমস্ত হাসপাতাল কর্মীরা পিছু পিছু এগিয়ে আসে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। অন্যদিকে প্রভূকুঞ্জে একে একে সেলেবের ভিড় বাড়তে থাকে, বহু তারকা ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলেন সেখানে, শেষবার দর্শণ করতে লতা মঙ্গেশকরকে।
এদিন বাড়িতেই তাঁকে পতাকায় জড়িয়ে সম্মান দেওয়া হয়। পাশাপাশি ট্যাবলো সাজিয়ে সম্পূর্ণ মর্যাদায় গোটা মুম্বই শহরের রাজপথ দিয়ে অন্তীম যাত্রার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। বাড়িতেই প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে সকাল থেকেই, নিরাপত্তা বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। বাড়ছিল সেলিব্রিটিদের ভিড়, বাড়ছিল মানুষের আনাগোনা।
এর কিছুক্ষণের মধ্যে বাইরে নিয়ে আসা হয় মরদেহ। সেখানেই তাঁকে সম্মান দিয়ে তোলা হয় গাড়িতে। ফুল দিয়ে সাজানো বাড়ি, সকলে মিলে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে এদিন সামিল হন শেষ যাত্রায়, গাড়ির পিছু পিছু বহু মানুষ হাঁটতে শুরু করেন। একবার শেষ দর্শণের আশার রাস্তার দুধারে ভিড় চোখে পড়ে এদিন। চোখের জলে ভাসে সকলেই।
গাড়ির সামনে এক গগণ চুম্বী ছবি, যেখানে লতা মঙ্গেশকরের চেনা হাসি চোখে পড়ে গাড়ির সামনে লাগানো হয়। যার পিছনে থাকে শত শত মানুষের ঢল। সকলে মিলে বিকেল ৪টে নাগাদ যাত্রা শুরু করে শিবাজি পার্কের উদ্দেশ্যে। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদী শেষ সম্মান জানাবেন। ইতিমধ্যেই সেখানে জমেছে ভিড়।
শেষ রক্ষা হল না। কঠিন লড়াই দীর্ঘ ২৮ দিনের। শনিবার দুপুরেই স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতী ঘটে। তখন থেকেই চলছিল অ্যাগ্রেসিভ ট্রিটমেন্ট। ডাক্তারের কথায় তিনি প্রাথমিক অবস্থায় টলারেট করছিলেন এই চিকিৎসা পদ্ধতি, রাতের দিকে অবস্থার উন্নতিও ঘটে। কিন্তু রবিবার ভোরেই মেলে ভয়ানক খবর, হঠাৎই স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতী ঘটায় ব্যর্থ হয় সকল চেষ্টা।
চির নিদ্রায় লতা মঙ্গেশকর। শনিবার মধ্যরাতে মেলে স্বস্তির খবর, সবস্থা স্থিতিশীল সুর -সম্রাজ্ঞী লতাজির। এদিন গোটা দেশ জুড়ে প্রার্থনায় যেন সাড়া দিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস, শনিবার বেলাতেই মিলেছিল দুঃসংবাদ।
শুধু দেশেই নয় সারা বিশ্বে তার কোটি কোটি ভক্ত রয়েছে। কোকিলকন্ঠী লতাজির মৃত্যুর পর শিল্প, সাহিত্য, সিনেমা, খেলাধুলায় সর্বস্তরের মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। দেশে দুই দিনের জাতীয় শোক পালন করা হবে এবং পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে দাহ করা হবে। এদিন আকাশে বাতাসে লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠের মাধুর্য্যে ভরপুর।
রাজশাহীর সময় /এএইচ