হাটহাজারী হতে ৯ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী (১৫) অপহরণ মামলার অপহৃত স্কুল ছাত্রী উদ্ধারসহ অপহরণকারীদের আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
অপহৃত স্কুল (১৫) সে ৯ম শ্রেণীতে পড়–য়া একজন ছাত্রী। আসামী মোঃ মোদাসসির বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমকে মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং বিরক্ত করত। ভিকটিম বিষয়টি তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জানায়। ভিকটিমের বাবা প্রবাসী হওয়ায় অভিভাবক হিসাবে ভিকটিমের মা তার মেয়েকে বিরক্ত না করার জন্য মোদাসসিরকে অনুরোধ করেন। ছাত্রীর মা ও তার পরিবারের লোকজন লোক লজ্জার ভয়ে ওই বিষয়ে কোন আপত্তি কিংবা স্থানীয় সালিশ বিচার না করে তার মেয়েকে নিজ দায়িত্বে মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে দিত। এরই ধারাবাহিকতায় (১৯ সেপ্টেম¦র) রাত ৯টায় স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘর হইতে বের হয়ে উঠানে যায়। এরপর ছাত্রী ঘরে না আসায় তার মা ও তার পরিবারের লোকজন আশ-পাশে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে পরদিন ছাত্রীর মা হাটহাজারী মডেল থানায় নিখোজ সংক্রান্তে একটি জিডি করেন যার জিডি নং-১৩৭৭, তারিখ-(২০ সেপ্টেম¦র ২০২২) তার মেয়েকে খোঁজাখুঁজি অব্যহত রাখেন।
ছাত্রীর মা ভিকটিমকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারেন , গত (১৯ সেপ্টেম¦র ২০২২) রাত ৯টার দিকে স্কুল ছাত্রী ঘর হতে বের হয়ে উঠানে পায়চারি করার সময় হঠাৎ আসামী মোদাসসির অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের সহযোগিতায় তার মেয়েকে জোর পূর্বক টানা হেচড়া করে রাস্তার উপর নিয়ে একটি সিএনজি গাড়ীতে তুলে অপহরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে চলে যায়। বিষয়টি জানার পর ছাত্রীর মা মোদাসসিরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন করে তার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামী তার মেয়েকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলে স্বীকার করে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা আসামী মোদাসসির এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩জনকে আসামী করে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-৩৫ তারিখ-২৩ সেপ্টেম¦র ২০২২ ইং ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী-২০০৩) ৭/৩০ এবং বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার এবং অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন নাজিরপাড়া এলাকার একটি বাসা হতে স্কুল ছাত্রী অপহরণের সাথে জড়িত প্রধান আসামী মোঃ মোদাসসির(২৫), পিতা-রেজাউল করিম, সাং-আমিরপাড়া, থানা-বাঁশখালী, থানা-হাটহাজারী জেলা-চট্টগ্রাম, রেজাউল করিম(৫৩),পিতা-মৃত-আব্দুস সালাম এবং সাবিহা সুলতানা (৪৫), স্বামী- রেজাউল করিম, উভয়সাং-চনুুয়া, থানা-বাঁশখালী, জেলা-চট্টগ্রামদের আটক করে। এ সময় অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী মোদাসসির এবং তার মা ও বাবা স¦ীকার করে বলে, স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, গত ৩ অক্টোবর তারা কক্সবাজার হতে বাস যোগে এসে চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থানাধীন নাজিরপাড়া এলাকায় একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিল এবং ৪ অক্টোবর ওই বাসা হতে অপহৃত ছাত্রীকে নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করার পরিকল্পনা করছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানায় র্যাব-৭ চট্টগ্রাম।