সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে দুই ছেলেসহ রওশন আরা বেগমকে (২৯) হত্যার রহস্য অবশেষে উন্মোচন হয়েছে।
এই হত্যার ঘটনায় সোমবার (৩ অক্টোবর) ভোরের আগে ডিবি ও বেলকুচি থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে আইয়ুব আলী ওরফে সাগর (২৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গ্রেপ্তার আইয়ুব আলীর প্রাথমিক জবানবন্দির ভিত্তিতে হত্যার রহস্য খোলাসা করেন সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম মণ্ডল।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার আইয়ুব আলী নিহত রওশন আরার সৎ ভাগিনা। তিনি উল্লাপাড়ার দুর্গানগর ইউনিয়নের নন্দিগাঁতী গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে। আইয়ুবের এনজিওর দেনা রয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ধুকুরিয়াবেড়ায় খালা রওশন আরার বাড়িতে এসে তিনি টাকা ধার চান। ধার না পেয়ে খালার বাড়িতে চুরির পরিকল্পনা করেন। দুই দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি আবারও খালার বাড়িতে আসেন এবং রাতে থেকে যান। চুরির সময় রওশন আরা টের পেয়ে যান। তখন তার বুকে শিল দিয়ে আঘাত করে এবং শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন। খালাতো ভাই জিহাদ (১০) ও মাহিন (৩) টের পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে তাদেরও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর ঘরের বাইরে থেকে শিকল আটকে পালিয়ে যান। গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে তিনি এ কথা জানান।
এদিকে, সোমবার দুপুরের সংবাদ সম্মেলনের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও এ কথা জানান আইয়ুব আলী। বেলকুচি থানার ওসি তাজমিলুর রহমান ও ডিবির উপপরিদর্শক জুলহাস উদ্দিন এ তথ্য বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত শনিবার (১ অক্টোবর) খবর পেয়ে পুলিশ ওই তিন মরদেহ উদ্ধার করে। সিরাজগঞ্জ পিবিআই পুলিশ, সিআইডি ও বেলকুচি থানা পুলিশ তখন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল।
তখন এই হত্যার জন্য সন্দেহের তীর গিয়েছিল রওশন আরার স্বামী সুলতানের দিকে। এলাকাবাসী তখন জানিয়েছিলেন, ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের তাঁত শ্রমিক সুলতান সেখের সাথে স্ত্রী রওশন আরা বেগমের দাম্পত্য কলহ ছিল। সুলতানের আরেকজন স্ত্রী আছেন। এ কারণে রওশন আরাদের সঙ্গে থাকতেন না। দ্বিতীয় স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর তিনি সম্প্রতি জামিনে বের হন।
রওশন আরা তার দুই শিশু সন্তান নিয়ে ধুকুরিয়াবেড়ার মৌবুপুর গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় ঘরের মধ্যে তিন জনের লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। লাশে পচন ধরে অধিকাংশ অংশ ফুলে ফোসকার মতো হয়ে গিয়েছিল। প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।