নড়াইল পৌরসভার মহিষখোলা এলাকায় একপাশে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মসজিদ, নামাজ পড়ছেন মুসল্লীরা। অপরপাশে পূজামন্ডপ, চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। যার যার ধর্ম সে সে পালন করছে। এ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর পূর্বে পুরাতন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। আর এর প্রায় ১০ বছর পর অর্থাৎ প্রায় ৪০ বছর পূর্বে মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা মন্ডপটি তৈরী করা হয়। এখানে শারদীয় দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ এলাকার মানুষের মাঝে নেই কোন ভেদাভেদ। যার যার ধর্ম সে সে পালন করছেন।
১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে এ বছরের পূজার আনুষ্ঠানিকতা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব বয়সের লোকজন ধর্মীয় আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে। এ উৎসব চলবে ৫ অক্টোবর পর্যন্তু। এবছর জেলায় ৫৫২টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতি বছরের মত এবারও শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
নড়াইল পৌরসভার মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি সুমন দাস বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলিম একে অপরের পরিপূরক হিসেবে এখানে বসবাস করি। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা এ মন্ডপে দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন পূজা করে আসছি। এখন পর্যন্তু কারো সাথে কখনও মনোমালিন্যও হয়নি। যার যার ধর্ম সে সে পালন করছি।
তিনি আরও বলেন, পূজামন্ডপ কমিটিতে যারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তাদের একটা বড় অংশ মুসলিম। তারা আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।
পুরাতন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা এনামুল হক বলেন, আমরা আমাদের ধর্ম পালন করি, তারা তাদের ধর্ম পালন করে এতে আমাদের কোন সমস্যা হয়না। আমাদের নামাজের সময় পূজার কার্যক্রম বন্ধ রাখে। নামাজ শেষ হলে তারা তাদের পূজা-অর্চনা, গানবাজনাসহ কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম কখনও অন্যের ধর্মকে অবমূল্যায়ন করতে শেখায় না। সকল ধর্মকে সম্মান দেখায়।
নড়াইল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, নড়াইলে আমরা মুসলিম-হিন্দু, বৈদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ একত্রে বসবাস করে আসছি। নড়াইলের মানুষ সব সময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসি, যার কারণে এখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধন রয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি চক্র দেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে। যে কোন ধরণের বিশৃংখলা এড়াতে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীরা সতর্ক রয়েছে বলেও জানান তিনি।