পরমাণু আলোচনা নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা বাড়ছে

আপলোড সময় : ০৯-০৬-২০২৫ ০২:২৯:০৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৯-০৬-২০২৫ ০২:২৯:০৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো তথ্য উল্লেখ নেই, যা ইঙ্গিত দেয় ওয়াশিংটন ‘একতরফা সমঝোতা’ চাপিয়ে দিতে চাইছে। এমন অভিযোগ করেছেন ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফ। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিওবার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। 

তিনি বলেছেন, এই প্রস্তাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মতো মৌলিক বিষয়ের উল্লেখ না থাকাই যুক্তরাষ্ট্রের অসততার প্রমাণ দেয়। গালিবাফ আরো বলেছেন, বিভ্রান্তিতে ভোগা মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি সত্যিই সমঝোতা চান, তাহলে তাকে তার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। 

২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান পাঁচ দফা গোপন আলোচনা করেছে। উদ্দেশ্য ছিল, ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির বিকল্প খুঁজে বের কর।  

তেহরানও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পরমাণু কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আনতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে প্রথম দফা ক্ষমতায় থাকাকালীন সেই চুক্তি পরিত্যাগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

৫ম দফা আলোচনা শেষে গত ৩১ মে ইরান জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি খসড়া প্রস্তাব পেয়েছে। তবে পরবর্তীতে প্রস্তাবে বিভিন্ন অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তিকর শর্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করে। 

যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে। কিন্তু তেহরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।

এই আলোচনার মূল বিষয় দু’টি হলো, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ। ইরান দাবি করছে, পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার রাখে। অপরদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকে ‘রেড লাইন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প ফের ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি জোরদার করেন এবং ঘোষণা দেন, ‘তেহরান কোনো অবস্থাতেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না।’ 

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানের প্রধান আলোচক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি গত মঙ্গলবার বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য ইরান কারো অনুমতি চাইবে না।

জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানই বিশ্বের একমাত্র অ-পারমাণবিক রাষ্ট্র, যারা ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করছে। যা পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তাঁর দেশের পরমাণু কর্মসূচির ‘মূল চাবিকাঠি’।

সোমবার থেকে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় শুরু হচ্ছে আইএইএ-এর বোর্ড অব গভর্নরসের বৈঠক, যেখানে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হবে।

এই প্রেক্ষাপটে রোববার ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি সতর্ক করে বলেছেন, যদি আইএইএ ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করে, তাহলে তাদেরকে সহযোগিতার মাত্রা কমিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছেন, আইএইএ যদি কোনো বিরূপ পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ইরান তাদের সঙ্গে আগের মতো উন্মুক্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা করবে না।

এদিকে শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি ইউরোপীয় শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে আইএইএ বোর্ডে ‘উস্কানিমূলক পদক্ষেপ’ গ্রহণের অভিযোগ করেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইরানের অধিকার লঙ্ঘন করা হলে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত আইএইএ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান তাদের সঙ্গে ঠিকভাবে সহযোগিতা করছে না এবং সেখানে কিছু গোপন পরমাণু উপকরণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

তেহরান এই প্রতিবেদনে কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, এটি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এবং ‘ইসরাইলের দেওয়া ভুয়া তথ্যের’ ভিত্তিতে তৈরি। 

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]