লিবিয়ায় সাগরে ভাসছে ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন, ৩৫ লাখ টাকা নেওয়া দালালকে পুলিশে সোপর্দ

আপলোড সময় : ২০-১২-২০২৫ ০৯:০১:৩৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২০-১২-২০২৫ ০৯:০১:৩৭ অপরাহ্ন
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এক কলেজ শিক্ষার্থীকে অবৈধ পথে ইটালি নেওয়ার পথে হত্যা করে দালালরা সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জীবিত না হোক মৃত ছেলের মরদেহ ফিরে পেতে বাড়িতে স্বজনরা আহাজারি করছেন। আশপাশের লোকজন প্রতিনিয়ত ওই বাড়িতে ভিড় করছেন। 

আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে অভিযুক্ত দালালকে আটক করে পুলিশ দিয়েছেন স্বজনরা।
 
নিহত রাকিব হোসেন স্বাধীন (২৩) উল্লাপাড়া উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের ইসলামপুর ভুতগাছা গ্রামের গোলাম কিবরিয়া ফিরোজের ছেলে। অভিযুক্ত দালাল আবুল কালাম আজাদ একই উপজেলার পূর্নিমাগাতি ইউনিয়নের ঘিয়ালা গ্রামের বাসিন্দা।

নিহতের বাবা গোলাম কিবরিয়া ফিরোজ বলেন, দালাল আবুল কালাম আজাদের বড় ছেলে সাদ্দাম আগে থেকেই ইটালি থাকে। এ অবস্থায় তার ছোট ছেলে জাকারিয়ার সাথে আমার ছেলে স্বাধীনকেও ইটালি পাঠানোর প্রস্তাব দেয়।

তাতে রাজি হলে কালামের দুই মেয়ের জামাই (ঢাকায় অবস্থানরত) উল্লাপাড়ার বন্যাকান্দি গ্রামের ইউনুস আলী ও মধ্যবড়হর গ্রামের মোন্নাফ আলীর সাথে কথা হয়। এরপর কালামকে ২৫ লাখ টাকা দেই। চলতি বছরের ২২ মে আজাদের ছেলে জাকারিয়া ও আমার ছেলে স্বাধীন ইতালীর যাওয়ার জন্য বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ ত্যাগ করে।

ফিরোজ আরো বলেন, তাদের প্রথমে ভারতের চেংনাই, এরপর পর্যায়ক্রমে দুবাই, শ্রীলংকা, মিশর ও সর্বশেষ লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়।

মাঝে ছেলে স্বাধীন আটক হয়েছে এবং কারাগারে আছে এমন কথা বলে দুই দফায় আরো ১০ লাখ নেয় কালাম। পাশাপাশি শ্রীংলকায় পৌছার পর তার ছেলে জাকারিয়াকে আমার ছেলের কাছ থেকে আলাদা করে দেয়।

ফিরোজ বলেন, গত ১২ নভেম্বর ১২২ জনকে একটি ট্রলারে করে লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি পাঠানোর চেষ্টা করে দালালরা। কিছুদুর যাওয়ার পর ট্রলারটি আংশিক ডুবে গেলে ট্রলারে থাকা ৯৭জনকে মারধরের পর হত্যা করে সাগরে ভাসিয়ে দেয় তারা। বিষয়টি জানার পর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, নিহতদের মধ্যে আমার ছেলে স্বাধীনও রয়েছে।

ফিরোজ আরো বলেন, বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে মাদারীপুরের ৭ জন গত ১৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরেছেন। ওই দিন বিমানবন্দরে গিয়ে তাদের কাছ থেকে আমার ছেলে স্বাধীন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।

ফিরোজ বলেন, এ ঘটনার পর কালামকে অনেক বলেছি, আমার ছেলের লাশটা অন্তত এনে দেও। কিন্তু সে কোনো কর্ণপাত করেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজখবর নিতে গিয়ে আরো ২/৩ লাখ টাকা খরচ করেছি। কিন্তু ছেলের কোনো হদিস মেলেনি। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) নিজ বাড়ি থেকে দালাল কালামকে আটক করেছি। তাদের স্বজনরা কেউ এ বিষয়ে দায়িত্ব না নেওয়ায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি।

ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে স্বাধীনের মা নারগিস খাতুন বলেন, ছেলে স্বাধীন এইচএসসি পাশ করে বিএ ক্লাসে ভর্তি হয়েছিল। দালাল কালাম নিজেও ১৫ বছর ইতালিতে ছিল। তার বড় ছেলে সাদ্দাম এখনও ইতালিতে আছে। আমার ছেলে স্বাধীন ও কালামের ছোট ছেলে জাকারিয়া দুই জন বন্ধু। জাকারিয়াও ইটালি যাবে তাই ছেলেকে পাঠাতে রাজি হয়েছিলাম। ওরা আমার ছেলেকে হত্যা করে সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে। তার লাশও শেষবারের মতো দেখতে পারলাম না। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে উল্লাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুপু কর আজ শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, নিহত স্বাধীনের স্বজনরা দালাল আবুল কালাম আজাদকে আটকের পর পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছে। তাকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।  

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]