রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে তিন ফসলি কৃষিজমি এখন ‘মরণফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। অবৈধ পুকুর খনন সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য এতটাই বেপরোয়া যে, ফসলি জমি রক্ষায় বাধা দিতে গিয়ে জুবায়ের হোসেন (২৫) নামের এক কৃষককে ভেকু (খনন যন্ত্র) দিয়ে পিষে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। একদিকে লাশের স্তূপ, অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় গোদাগাড়ী ও মোহনপুর এলাকায় চলছে ফসলি জমি নিধনের মহোৎসব।
তানোর ও মোহনপুরের সীমান্তবর্তী বড় পালশা বিলে গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ঘটে এক বীভৎস হত্যাকাণ্ড। তিন ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খননে বাধা দিতে গিয়েছিলেন স্থানীয় জুবায়েরসহ কয়েকজন গ্রামবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, খনন কাজের নেতৃত্বে থাকা প্রভাবশালী আনিসুর রহমান বকুল, রুহুল ও রুবেলের নির্দেশে ভেকু চালক জুবায়েরকে পিষে দেয়।
ঘটনার পর সিন্ডিকেটের দাপটে নিহতের পরিবার মামলা করতেও হিমশিম খাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালীদের ভয়ে নিহতের চাচা নিজেই হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। যদিও এ ঘটনায় ভেকু চালক আব্দুল হামিদকে আটক করেছে মোহনপুর থানা পুলিশ, কিন্তু মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈনুদ্দীন ঘটনাস্থল ও নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
ইউএনও ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভেকু ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
ওসি মঈনুদ্দীন বলেন, নিহতের পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য থানায় আনার চেষ্টা চলছে। আটক ভেকু চালকের নাম আব্দুল হামিদ (২৮)। নিহতের পরিবার দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গোদাগাড়ীর রাজাবাড়িতে ‘যুবলীগ দাপট’: প্রশাসনের নাকে ডগা দিয়েই লুট
মোহনপুরের হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ি এলাকার ভয়াবহ চিত্র। সারাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা সীমিত থাকলেও রাজাবাড়িতে যুবলীগ নেতা জনির ক্ষমতা এখনো ‘তুঙ্গে’।
জুগি ডাংগা বাজনা পুকুর গ্রাম :
এখানে প্রায় ৪ একর তিন ফসলি জমি অবৈধভাবে খনন করছেন যুবলীগ নেতা জনি। সহযোগীতায় স্থানীয় সাবেক আ’লীগ কর্মী ডলার দু’জনে মিলে খননকৃত মাটি ডাম্প ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি ফসলি জমির বুক চিরে মাটি ডাম ট্রাকে করে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, জনির ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।
ঈদুলপুর :
এই পয়েন্টে পরশ ও সজিব নামে দুই ব্যক্তি রাতের আঁধারে আরও ৪ একর জমি ধ্বংস করছেন। সংবাদকর্মীরা অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে তারা কৌশলে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করেন। এই অবৈধ খননের ফলে কোটি টাকার কার্পেটিং রাস্তাগুলো ভারি ট্রাকের চাপে ধসে পড়ছে।
ফসলি জমি নিধনের এই উৎসবে প্রশাসনের ভূমিকা এখন বড় প্রশ্নচিহ্নে। গোদাগাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. নাজমুস সাদাত রত্ন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই, ঠিকানা দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী এসি ল্যান্ড মো. শামসুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রেমতলি ফাড়ির পুলিশ আইসি মাকছুদ প্রশাসনের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, ‘মাটি কাটা দেখেছি, কিন্তু অনুমতি দেওয়ার মালিক ইউএনও ও এসি ল্যান্ড। তারা অভিযান চালালে আমরা শুধু সাথে যাই।’
রাজশাহীর এই ‘পুকুর সিন্ডিকেট’ ভাঙতে হলে শুধুমাত্র ভেকু চালক নয়, বরং নেপথ্যে থাকা যুবলীগ নেতা জনি, প্রভাবশালী বকুল বা রুহুলদের মতো রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনা জরুরি। অন্যথায়, প্রশাসনের এই ‘অবহিত নই’ নামক ঢাল ব্যবহার করে আরও অনেক জুবায়েরকে প্রাণ দিতে হবে।
তানোর ও মোহনপুরের সীমান্তবর্তী বড় পালশা বিলে গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ঘটে এক বীভৎস হত্যাকাণ্ড। তিন ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খননে বাধা দিতে গিয়েছিলেন স্থানীয় জুবায়েরসহ কয়েকজন গ্রামবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, খনন কাজের নেতৃত্বে থাকা প্রভাবশালী আনিসুর রহমান বকুল, রুহুল ও রুবেলের নির্দেশে ভেকু চালক জুবায়েরকে পিষে দেয়।
ঘটনার পর সিন্ডিকেটের দাপটে নিহতের পরিবার মামলা করতেও হিমশিম খাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালীদের ভয়ে নিহতের চাচা নিজেই হাসপাতাল থেকে তড়িঘড়ি লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। যদিও এ ঘটনায় ভেকু চালক আব্দুল হামিদকে আটক করেছে মোহনপুর থানা পুলিশ, কিন্তু মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈনুদ্দীন ঘটনাস্থল ও নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
ইউএনও ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভেকু ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
ওসি মঈনুদ্দীন বলেন, নিহতের পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য থানায় আনার চেষ্টা চলছে। আটক ভেকু চালকের নাম আব্দুল হামিদ (২৮)। নিহতের পরিবার দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গোদাগাড়ীর রাজাবাড়িতে ‘যুবলীগ দাপট’: প্রশাসনের নাকে ডগা দিয়েই লুট
মোহনপুরের হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ি এলাকার ভয়াবহ চিত্র। সারাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা সীমিত থাকলেও রাজাবাড়িতে যুবলীগ নেতা জনির ক্ষমতা এখনো ‘তুঙ্গে’।
জুগি ডাংগা বাজনা পুকুর গ্রাম :
এখানে প্রায় ৪ একর তিন ফসলি জমি অবৈধভাবে খনন করছেন যুবলীগ নেতা জনি। সহযোগীতায় স্থানীয় সাবেক আ’লীগ কর্মী ডলার দু’জনে মিলে খননকৃত মাটি ডাম্প ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তিনি ফসলি জমির বুক চিরে মাটি ডাম ট্রাকে করে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, জনির ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না।
ঈদুলপুর :
এই পয়েন্টে পরশ ও সজিব নামে দুই ব্যক্তি রাতের আঁধারে আরও ৪ একর জমি ধ্বংস করছেন। সংবাদকর্মীরা অনুমতিপত্র দেখতে চাইলে তারা কৌশলে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করেন। এই অবৈধ খননের ফলে কোটি টাকার কার্পেটিং রাস্তাগুলো ভারি ট্রাকের চাপে ধসে পড়ছে।
ফসলি জমি নিধনের এই উৎসবে প্রশাসনের ভূমিকা এখন বড় প্রশ্নচিহ্নে। গোদাগাড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. নাজমুস সাদাত রত্ন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই, ঠিকানা দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী এসি ল্যান্ড মো. শামসুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রেমতলি ফাড়ির পুলিশ আইসি মাকছুদ প্রশাসনের ওপর দায় চাপিয়ে বলেন, ‘মাটি কাটা দেখেছি, কিন্তু অনুমতি দেওয়ার মালিক ইউএনও ও এসি ল্যান্ড। তারা অভিযান চালালে আমরা শুধু সাথে যাই।’
রাজশাহীর এই ‘পুকুর সিন্ডিকেট’ ভাঙতে হলে শুধুমাত্র ভেকু চালক নয়, বরং নেপথ্যে থাকা যুবলীগ নেতা জনি, প্রভাবশালী বকুল বা রুহুলদের মতো রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনা জরুরি। অন্যথায়, প্রশাসনের এই ‘অবহিত নই’ নামক ঢাল ব্যবহার করে আরও অনেক জুবায়েরকে প্রাণ দিতে হবে।