আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ

আপলোড সময় : ১৪-১২-২০২৫ ০২:০১:৫০ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৪-১২-২০২৫ ০২:০১:৫০ পূর্বাহ্ন
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যার মাত্র দুই দিন পর, ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি পালন করছে।

আজ সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ সময় তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবেন। পরে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করবে।

একই দিনে সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা, যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে। দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ শহীদ হন। তবে বেছে বেছে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই হত্যাযজ্ঞ চালায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদ জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার সহধর্মিণী বাসন্তী গুহঠাকুরতা তাঁর গ্রন্থে লিখেছেন, একাত্তরের অনেক আগেই এই হত্যার নীলনকশা আঁকা হয়েছিল। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়, যাতে স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত করা যায়।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে জড়িত অনেকের বিচারের রায় ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, মো. কামারুজ্জামান, বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম হোতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং আলবদর বাহিনীর প্রধান ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনীর দেশীয় দোসর আলবদরের সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও সংস্কৃতিকর্মীদের অপহরণ করা হয়। পরে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে রায়েরবাজার ও মিরপুরে তাঁদের হত্যা করা হয়। এই দুটি স্থান বর্তমানে বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, ডা. আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রশীদুল হাসান, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, সেলিনা পারভিনসহ আরও বহু গুণীজন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছে সেইসব মহান সন্তানদের, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]