যুক্তরাষ্ট্রে ভুলভাবে নির্বাসিত আব্রেগোকে তাৎক্ষণিক মুক্তির নির্দেশ ফেডারেল বিচারকের

আপলোড সময় : ১৩-১২-২০২৫ ০৬:৫২:০৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-১২-২০২৫ ০৬:৫২:০৪ অপরাহ্ন
ফেডারেল এক বিচারক বৃহস্পতিবার আদেশ দিয়েছেন যে ভুলভাবে নির্বাসিত হওয়া এবং এখন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসা কিলমার আব্রেগো গার্সিয়াকে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তার বিরুদ্ধে এখনো ফৌজদারি অভিযোগ চলমান।

আব্রেগো গার্সিয়া আবার এল সালভাদরে পাঠানোর বিরুদ্ধে সুরক্ষিত থাকলেও, মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) তাকে এমন কয়েকটি আফ্রিকান দেশে পাঠানোর প্রস্তাব দেয়, যেসব দেশের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের জেলা আদালতের বিচারক পলা জিনিস ৩১ পৃষ্ঠার রায়ে লিখেছেন,আব্রেগো গার্সিয়াকে যে আইনি বহিষ্কার আদেশ ছাড়াই তৃতীয় কোনো দেশে পাঠাতে আইসিই হেফাজতে রাখা হয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে তার চাওয়া নির্দেশ যথার্থ।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েক মাসে বিবাদীদের আচরণও দেখায় তার আটক থাকা আসলে বহিষ্কার কার্যকর করার মৌলিক উদ্দেশ্যে ছিল না। তাই আব্রেগো গার্সিয়াকে আর আটকে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই. বিচারক তার মুক্তিকে 'তাৎক্ষণিক' বলে আদেশ দেন এবং সরকারকে পূর্বাঞ্চলীয় সময় বিকেল ৫টার মধ্যে আপডেট দিতে নির্দেশ দেন।

বিকাল ৫টার কিছু পরেই অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, তার আইনজীবী জানিয়েছেন যে আব্রেগো গার্সিয়া ইমিগ্রেশন হেফাজত ত্যাগ করেছেন।

যদিও জিনিসের রায়ে আইসিই তার মুক্তির পথ তৈরি হয়েছে, তবে মানব পাচারের অভিযোগে চলমান মামলায় তিনি এখনো প্রিট্রায়াল শর্তাবলীর অধীন রয়েছেন।

এর মধ্যে রয়েছে মেরিল্যান্ডের তার বাড়িতে ইলেকট্রনিক পর্যবেক্ষণসহ গৃহবন্দিত্ব, তৃতীয় পক্ষের হেফাজত এবং আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অন্যান্য শর্ত।

তবুও, ইমিগ্রেশন হেফাজত থেকে মুক্তির জন্য মাসের পর মাস লড়াই করা আব্রেগো গার্সিয়ার জন্য জিনিসের রায় একটি বড় আইনি বিজয়। জিনিস সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মনোনীত বিচারক।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির মুখপাত্র ত্রিশা ম্যাকলাফলিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, একজন ওবামা-মনোনীত বিচারকের নগ্ন বিচারিক কর্মতৎপরতা এটি। এই আদেশের কোনো বৈধ আইনি ভিত্তি নেই এবং আমরা আদালতে এর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ লড়াই চালিয়ে যাব।

প্রায় ১৫ বছর আগে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা সালভাদরীয় নাগরিক আব্রেগো গার্সিয়া মার্চ মাসে ভুলভাবে এল সালভাদরের একটি মেগা-কারাগারে নির্বাসিত হন, যদিও একটি আদালতের আদেশ তাকে নিজ দেশে পাঠানো নিষিদ্ধ করেছিল কারণ তার ওপর সহিংস হামলার ঝুঁকি ছিল।

এই ঘটনা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন দমন অভিযানের একটি বড় আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয় যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের অন্যতম প্রধান নীতি। প্রশাসন দাবি করছে, আব্রেগো গার্সিয়া এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্য, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেছেন।

আব্রেগো গার্সিয়ার মামলা দ্রুত সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে ফেরত আসে, এবং শেষ পর্যন্ত জুনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন, যখন বিচার বিভাগ টেনেসিতে তার বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ উন্মোচন করে। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।

টেনেসির বিচারক তাকে বিচারাধীন অবস্থায় মুক্তি দেওয়ার পর তিনি মেরিল্যান্ডে ফিরে যান, যেখানে তিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করেছেন। কিন্তু আগস্টে আইসিই তাকে ফের ইমিগ্রেশন হেফাজতে নেয় এবং তখন থেকেই তিনি আটক আছেন।

এদিকে, তাকে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো থেকে রক্ষা করা আদালতের আদেশ বহাল থাকায়, ট্রাম্প প্রশাসন তাকে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রস্তাব দিতে শুরু করে।

কখনো তাকে উগান্ডা, এসওয়াতিনি, ঘানা বা লাইবেরিয়ায় পাঠানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে কর্মকর্তারা জানান, ঘানা-সম্পর্কিত নোটিশটি 'অকালপ্রসূত' ছিল।

আব্রেগো গার্সিয়া দাবি করেন, তাকে বরং কোস্টা রিকায় যেতে দেওয়া উচিত। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন বলে, কোস্টা রিকা তাকে নিতে রাজি নয়।

বিচারক এই দাবি অস্বীকার করে রায়ে লিখেছেন যে ট্রাম্প প্রশাসন আদালতকে 'সচেতনভাবে বিভ্রান্ত করেছে'।

জিনিস লিখেছেন, এটি স্পষ্টতই বিবাদীদের কাছে অস্বস্তিকর সত্য ছিল।

কিন্তু মূল বিষয় হলো কোস্টা রিকাকে সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে স্বীকার করতে বিবাদীদের ধারাবাহিক অস্বীকৃতি, এমন সব আফ্রিকান দেশে তাকে পাঠানোর হুমকি যেগুলো তাকে নিতে সম্মত নয়, এবং আদালতে লাইবেরিয়া এখন একমাত্র দেশ বলে ভুল তথ্য প্রদান, এসবই দেখায় তার আটক থাকার উদ্দেশ্য ‘সময়োপযোগী তৃতীয় দেশে বহিষ্কার’ ছিল না বলে বিচারক রায়ে উপসংহার টেনেছেন।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]