তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে সেমিডিপ (সেচ মটর) দখলকে কেন্দ্র করে এক নারীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা ও তার মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত আলেয়া বিবি বর্তমানে তানোর উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, কৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের পুত্র নজরুল ইসলাম দুখু (৩৮) ও কামরুজ্জামান গতি (৪৫) দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একটি সেমিডিপ জবর দখলের চেষ্টা করে আসছিলেন। ভুক্তভোগী আলেয়া বিবি (৪০) জানান, তার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় জেল নম্বর-৮২, প্রাণপুর মৌজায় আরএস-১০০ নম্বর দাগে এই সেমিডিপটি স্থাপন করেছিলেন এবং স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি নিজেই এটি পরিচালনা করে আসছেন।
দখলের চেষ্টার কারণে আলেয়া বিবি আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা (মামলা নম্বর ৮৫৪ পি/২০২৫, তানোর) দায়ের করেন। আদালত তখন সেমিডিপ দখল না করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাও প্রদান করেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২৯ নভেম্বর সকালে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাঁশের লাঠি ও লোহার হাতুড়ি নিয়ে সেমিডিপের পাশে উপস্থিত হয়ে আলেয়া বিবিকে গালিগালাজ শুরু করেন। আলেয়া বিবি সেখানে গেলে ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম দুখুর নির্দেশে ২ নম্বর আসামি তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করেন। একপর্যায়ে আলেয়া বিবি মাটিতে পড়ে গেলে তাকে গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ সময় আলেয়া বিবিকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তার মেয়ে তাসমিন আক্তার টিলা (২২)-কেও বেধড়ক মারধর করা হয় এবং তার শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিরা লোহার হাতুড়ি দিয়ে আলেয়া বিবিকে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। সম্প্রতি মা ও মেয়েকে মারপিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নাইমুল ইসলাম ও আফান আলীসহ কয়েকজন এগিয়ে এসে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করেন। তাসমিন আক্তারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং গুরুতর জখম আলেয়া বিবিকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জনৈক তৌহিদের মদদে তারা এসব অপকর্ম করে আসছে এবং তৌহিদ এই ঘটনার নেপথ্যের 'নাটের গুরু'।
এ ঘটনায় আলেয়া বিবি বাদী হয়ে নজরুল ইসলাম দুখু ও কামরুজ্জামানকে আসামি করে তানোর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম দুখু তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, "আমরা অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"