চিনা শিল্প বিনিয়োগ কেন্দ্র দখল করল আরাকান আর্মি

আপলোড সময় : ৩১-০৫-২০২৫ ০৯:৪২:৪৬ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ৩১-০৫-২০২৫ ০৯:৪২:৪৬ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ সীমান্ত দখলের পরে এ বার মায়ানমারের বিদ্রোহীদের ‘নজর’ দেশের প্রশাসনিক এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রে! গত কয়েক দিন ধরে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে কিয়াউকফিউ বন্দরের অদূরে চিনা শিল্প বিনিয়োগকেন্দ্র দখল করেছে বিদ্রোহী জোটের বৃহত্তম শরিক আরাকান আর্মি। তাদের হামলার নিহত হয়েছেন সামরিক জুন্টা সরকারের ফৌজের এক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।

মায়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক স্বঘোষিত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে, কিয়াউকফিউ শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে পিয়াং সি কে এলাকায় জুন্টা সেনার একটি ব্যাটেলিয়নের সদর দফতর ঘিরে ফেলেছে আরাকান আর্মি। কিয়াউকফিউ-রাম্রি জাতীয় সড়কের পাশে পিয়াইন সি কাই জনপদও দখল করেছে তারা। তবে কিয়াউকফিউ শহরে মোতায়েন একটি সেনা ব্রিগেড এখনও প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। তার অদূরে রয়েছে চিনের একটি তেল শোধনাগার। সেখানে এখনও ঢোকেনি বিদ্রোহীরা।

বাণিজ্য রাজধানী (তথা প্রাক্তন রাজধানী) ইয়াঙ্গনের অদূরে থান্ডওয়ে নৌঘাঁটির দখল নিয়েছিল আরকান আর্মি। পাশের গাওয়া শহরও তাদের দখলে। এই পরিস্থিতিতে সামরিক অবস্থানগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ পিয়াং সি কে দখলে আসায় ইয়াঙ্গনমুখী অভিযান চালাতে বিদ্রোহীদের সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর স্নাইপার হামলায় জুন্টা সেনার ১১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ডার কিয়াও মিও আউং এবং এক সেনা ক্যাপ্টেন নিহত হয়েছিলেন। শুক্রবার তাঁদের দেহ হেলিকপ্টারে ইয়াঙ্গনে পাঠানো হয় বলে প্রকাশিত খবরে দাবি।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা ইতিমধ্যেই আরাকান আর্মি দখল করেছে। সহযোগী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’র সহযোগিতায় মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের অধিকাংশও দখলে নিয়েছে তারা। জুন্টাবিরোধী নতুন জোট ‘চিন ব্রাদারহুড’-এর শরিক ‘ইয়াও ডিফেন্স ফোর্স’, সাগাইন অঞ্চলে সক্রিয় ‘ইয়াও আর্মি’ এবং ‘মনিওয়া পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স’-ও আরাকান আর্মির সহযোগী হয়ে ধারাবাহিক ভাবে হামলা চালাচ্ছে জুন্টা সেনার উপর। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী সু চির দল ‘ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি’র নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করেছিল মায়ানমার সেনা। শুরু হয়েছিল সামরিক জুন্টার শাসন। তার আড়াই বছরের মাথায়, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’। পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জুন্টা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির প্রতি সমর্থন জানায়। বিদ্রোহীদের মদতপুষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠী ‘দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি’ (ইউডব্লিউএসপি) ইতিমধ্যেই কয়েকটি ‘মুক্ত’ এলাকায় সমান্তরাল সরকার চালানো শুরু করে দিয়েছে। তবে গত জানুয়ারিতে বেজিঙের মধ্যস্থতায় ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’-এর দ্বিতীয় বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী এমএনডিএএ সে দেশের সামরিক জুন্টা নিয়ন্ত্রিত সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি করেছে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]