বারে বারে ভুলে যাওয়া, কতটা বিপজ্জনক ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’

আপলোড সময় : ০৭-১১-২০২৫ ০২:৫৯:৫২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৭-১১-২০২৫ ০২:৫৯:৫২ অপরাহ্ন
শরীরের এক দিক অসাড় হয়ে যাওয়া, মুখ বেঁকে যাওয়া বা আচমকা স্মৃতিলোপ পাওয়ার মতো লক্ষণগুলি দেখা দেয় না। তাই রোগীও বুঝতে পারেন না, তাঁর শরীরে কী কী বদল ঘটছে। ফলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা মাথাতেই আসে না। রোজের কর্মব্যস্ততায় ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। ফলে কয়েক মাস পরে এক বড়সড় স্ট্রোকের ধাক্কায় একেবারে যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থা হয়। এতটাই বিপজ্জনক ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’।

ব্রেন স্ট্রোকের লক্ষণ কেমন হয়, তা অনেকেরই জানা। এখানেই আলাদা ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় সম্প্রতি সাইলেন্ট স্ট্রোক নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের ব্রেন স্ট্রোক জানান দিয়ে আসে না। কথা বলতে বলতে আচমকা জিভ অবশ হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, শরীরের এক দিক অসাড় হয়ে আসার মতো চেনা লক্ষণগুলি এ ক্ষেত্রে বোঝা যায় না। বরং রোজের জীবনে এমন কিছু বদল আসতে থাকে, যা সাধারণ ভেবেই এড়িয়ে যান বেশির ভাগ মানুষই। ফলে স্ট্রোক যে হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা মাথাতেই আসে না। গবেষকেরা সাইলেন্ট স্ট্রোককে বলেন নিঃশব্দ ঘাতক। বয়স্কেরা কেবল নন, ইদানীং কমবয়সিরাও এমন ব্রেন স্ট্রোকের শিকার হচ্ছেন।

‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’ ব্যাপারটা ঠিক কী?
কাজকর্ম করার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষের অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রয়োজন হয়। মস্তিষ্কের কোষেরও তাই। মস্তিষ্কের কোষে যদি অক্সিজেন সঠিক সময়ে না পৌঁছোয়, তখনই গোলমালটা বাধে। আর যদি কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনী সরু হয়ে গিয়ে সেখানে ডেলা বাঁধার মতো রক্ত আটকে যায়, তখন মস্তিষ্কের কোষগুলি নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে। সেগুলি আর সঙ্কেত পরিবহণ করতে পারে না। তখন স্ট্রোক হানা দেয়। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কুঠুরিগুলির সক্রিয়তা কমতে থাকে। তাই এ ক্ষেত্রে রোগীর বারে বারে ভুলে যাওয়া, বিভ্রান্তি, মেজাজের ঘন ঘন বদল, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসার মতো উপসর্গ দেখা দিতে থাকে।

লক্ষণগুলিই আলাদা
সাইলেন্ট স্ট্রোকে শরীর আসাড় হয় না, বরং মনের অবস্থার পরিবর্তন হয়। চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যায়, সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। যে কোনও বিষয়েই ভুলে যাওয়া বা আচমকা স্মৃতির পাতা খালি হয়ে আসার লক্ষণ দেখলে অনেকে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিনাশের রোগ ভেবে ভুল করে বসেন। সাইলেন্ট স্ট্রোকের কারণেও কিন্তু এমন হয়। অক্সফোর্ডের গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এমনও দেখা গিয়েছে, রোগীর ঘন ঘন ‘মুড সুইং’ হচ্ছে, কোনও বিষয়েই মনোযোগ দিতে পারছেন না, অনেক কিছু ভুলেও যাচ্ছেন। এমন সমস্যা যদি ক্রনিক হয়ে ওঠে, তখনই তা চিন্তার কারণ হয়ে । সাইলেন্ট স্ট্রোকে শরীরের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। হাঁটতে চলতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা প্রবল ভাবে বেড়ে যায়। কোনও কারণ ছাড়াই ক্লান্তি বোধ হতে থাকে, রাতে ঘুম আসতে চায় না।

সাইলেন্ট স্ট্রোক তাঁদেরই বেশি হয়, যাঁদের রক্তচাপ খুব বেশি, ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে নেই, হার্টের অসুখ রয়েছে, কোলেস্টেরল যখন তখন ওঠানামা করে, ওজন খুব বেশি। অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহলও এমন সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই সাইলেন্ট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে।
১) ওজন কমানো খুব জরুরি।
২) যাঁদের বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব, ভারী শরীর, তাঁদের জন্য রক্তচাপ ১৪০–৯০ হওয়া স্বাভাবিক। এর চেয়ে খুব বেশি হেরফের হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩) জল খান মেপে। খুব বেশি জল যেমন ক্ষতিকারক, তেমন খুব কম জল খেলেও চলবে না।
৪) হাঁটাহাঁটি সবচেয়ে ভাল ব্যায়াম। দিনে আধ ঘণ্টা অন্তত হাঁটুন। হালকা যোগাসনও করতে পারেন।
৫) ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে। বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস, নরম পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]