থানায় মামলা করতে গেলে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওসি, আদালতে কাঁদলেন ভুক্তভোগী তরুণী

আপলোড সময় : ২০-১০-২০২৫ ০১:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২০-১০-২০২৫ ০১:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি নুরুল ইসলাম বাদলসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক তরুণীকে ধর্ষণচেষ্টা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, জখম ও পরবর্তী সময়ে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী সালমা আক্তার (ছদ্মনাম) নামে এক তরুণী জানিয়েছেন, দীর্ঘ তিন বছর ধরে তিনি অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা, হুমকি ও ভয়ভীতির শিকার হচ্ছেন। 

সালমা আক্তারের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রতারক চক্র চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকরি না পেয়ে তিনি মঠবাড়িয়া থানার তৎকালীন ওসি নুরুল ইসলাম বাদলের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ করার পর ওসি বাদল প্রথমে তাঁকে আশ্বাস দিলেও পরে থানার পাশের নারী-শিশু কক্ষে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন সালমা।

তিনি আরও জানান, “আমি প্রতিবাদ করে সেখান থেকে বের হয়ে আসি। এরপর থেকেই ওসি বাদল ক্ষিপ্ত হয়ে একের পর এক লোক দিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়াতে থাকে। থানায় গিয়ে ন্যায়বিচার চাইলে উল্টো আমাকে হয়রানি করা হয়।”

ভুক্তভোগীর ভাষ্য, ২০২৩ সালে তিনি বিষয়টি পিরোজপুর পুলিশ সুপার, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এবং আইজিপি বরাবর অভিযোগ করেন। তদন্তের পর ওসি নুরুল ইসলাম বাদল, তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল হক, এসআই আবুল কাসেম, এএসআই ফিরোজ হাসান ও দ্বিতীয় কর্মকর্তা মো. কুদ্দুসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। 

তবে বিভাগীয় মামলা চলাকালেও অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা সালমার বাড়িতে গিয়ে তাকে হুমকি দেন এবং ‘খারাপ আচরণ’ করেন। এই ঘটনার পর ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর তিনি পিরোজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন।

কিন্তু মামলার শুনানির দিন তাকে আদালতে যেতে বাধা দেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক তিনটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয় বলে দাবি করেন সালমা। এরপর তিনি মঠবাড়িয়া ও পিরোজপুর সদর থানায় পৃথক দুটি জিডিও করেন।

ভুক্তভোগী আরও বলেন, “আমার মা নেই, বাবা গুরুতর অসুস্থ। এই অন্যায়-অত্যাচারের কারণে আমার পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে গেছে। আমি শুধু ন্যায়বিচার চাই।”

২০২৫ সালের আগস্টে সালমার বাড়িতে হামলার অভিযোগও রয়েছে। তার দাবি, সাবেক ওসি বাদলের নির্দেশে একদল লোক তার বাসায় ঢুকে লুটপাট ও হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। মামলা করতে গেলে থানায় পুলিশ নিতে চায়নি, পরে ১০ অক্টোবর মামলা নথিভুক্ত হলেও মূল আসামিদের বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে বরখাস্ত হওয়া এএসআই আবুল কালাম আজাদ সালমার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে আসছেন। টাকা না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নতুন করে ‘বিস্ফোরক আইনে মিথ্যা মামলা’ দেওয়া হয়। 

সালমা বলেন, “আমার বাবা এক মাস হাজত খেটে বের হয়েছেন। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি বা সম্পৃক্ততায় নেই। শুধু ন্যায়বিচার চাই।”

এই বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক ওসি নুরুল ইসলাম বাদলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “বিষয়টি সংবেদনশীল। ভুক্তভোগীর অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বিভাগীয় ও আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]