তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

আপলোড সময় : ০৯-১০-২০২৫ ০১:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৯-১০-২০২৫ ০১:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন
তাহাজ্জুদ শব্দের শাব্দিক অর্থ মূলত রাত জাগা। ইসলামের পরিভাষায় তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ রাত জেগে নামাজ আদায় করা। গভীর রাতে বেশিরভাগ মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন আল্লাহর ভালোবাসায় তার সন্তুষ্টির জন্য বিছানা ত্যাগ করা ও উত্তরূপে অজু করে নফল নামাজ আদায় করাই হলো তাহাজ্জুদ যা আল্লাহ তাআলার প্রতি বান্দার গভীর প্রেম ও আনুগত্য প্রকাশ করে।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত
ইসলামে তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নামাজ। আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায়। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর নফল নামাজসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ আমল তাহাজ্জুদের নামাজ।  হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, রমজানের পর রোজা রাখার উত্তম সময় মুহাররম মাস আর ফরজ নামাজের পর উত্তম নামাজ রাতের নামাজ। (সহিহ মুসলিম: ২৭২৫)

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আপনারা কিয়ামুল লাইলের প্রতি যত্নবান হোন। কারণ এই নামাজ আপনাদের পূর্ববর্তী নেক ব্যক্তিদের অভ্যাস এবং রবের নৈকট্য লাভের বিশেষ মাধ্যম, পাপরাশী মোচনকারী এবং গোনাহ থেকে বাধা প্রদানকারী। (সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৯)

কোরআনে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীদের প্রশংসা
আল্লাহ তাআলা কোরআনে তাহাজ্জুদ আদায়কারীদের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের রবকে ডাকে আশায় ও শঙ্কায়, এবং তাদেরকে যে রিজিক দান করেছি তা থেকে তারা ব্যয় করে। কেউ জানে না চোখ জুড়ানো কী নেয়ামত তাদের জন্য লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাদের কাজের পুরস্কার হিসেবে। (সুরা সাজদা: ১৬, ১৭)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা জান্নাতবাসীদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন তারা শেষ রাতে ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, যারা তাকওয়া অর্জন করে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট জান্নাত যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নদীসমূহ, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। সেখানে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র স্ত্রীগণ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি। আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা। যারা বলে, হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ইমান আনলাম তাই আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আজাব থেকে রক্ষা করুন। যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, আনুগত্যশীল ও ব্যয়কারী এবং শেষ রাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারী। (সুরা আলে ইমরান: ১৫-১৭)

মহানবী (সা.) নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। কখনও তাহাজ্জুদ ছুটে গেলে কাজা করে নিতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) রাতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এত বেশি নামাজ পড়তেন যে, তার পা ফুলে যেতো। মহানবীর (সা.) কষ্ট দেখে আয়েশা (রা.) একদিন বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এত কষ্ট করছেন, অথচ আপনার পূর্বাপর সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে! আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার কি শোকর আদায়কারী বান্দা হওয়া উচিত নয়? (সহিহ বুখারি: ৪৮৩৭, সহিহ মুসলিম: ২৮২০)

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
ইশার পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত সময়ের যে কোনো অংশেই তাহাজ্জুদ পড়া যায়। তবে রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদ পড়া সবচেয়ে উত্তম। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, শেষ রাতের সালাতে (ফেরেশতাগণের) উপস্থিতি থাকে। আর এটা সবচেয়ে উত্তম। (সহিহ মুসলিম: ৭৫৫)

এ হাদিসের আলোকে আমরা বলতে পারি তাহাজ্জুদ রাতের শেষাংশে পড়া সবচেয়ে উত্তম। তবে কারও পক্ষে শেষ রাতে ওঠা কষ্টকর হলে ইশার পরও তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ রয়েছে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]