হিজরতের পর প্রথম যে ৪ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন মহানবী (সা.)

আপলোড সময় : ০৮-১০-২০২৫ ০৩:৩৮:২৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৮-১০-২০২৫ ০৩:৩৮:২৮ অপরাহ্ন
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু সালাম (রা.) বর্ণনা করেন—যখন নবী মুহাম্মদ (সা.) প্রথমবার মদিনায় আগমন করেন, আমি তাকে দেখতে মানুষের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ি। তাকে দেখেই বুঝে গেলাম, এ মুখ মিথ্যাবাদীর নয়। তার মুখে আমি যে প্রথম কথা শুনি, তা হলো—

‘হে মানুষ! ক্ষুধার্তদের আহার দাও, সালাম প্রচার করো, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখো এবং যখন অন্যরা ঘুমায়, তখন নামাজ পড়ো—এর মাধ্যমে তোমরা শান্তির সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহিহ বুখারি)

মানবকল্যাণের আহ্বান
মদিনায় হিজরতের পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই প্রথম আহ্বানই ছিল সমাজে শান্তি ও নৈতিকতার ভিত্তি স্থাপন। তিনি যে সমাজে প্রবেশ করলেন, সেটি ছিল নানা বিভেদ ও সংঘাতপূর্ণ। সেখানে তিনি মানুষের কল্যাণ, ভালোবাসা ও পারস্পরিক সহযোগিতার বার্তা দিয়েছিলেন।

প্রবীণ নেতৃবৃন্দ ও সমাজ সংগঠকরা যেমন সমাজে মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেন, তেমনি নবী (সা.)-এরও উদ্দেশ্য ছিল মানুষের হৃদয়ে দয়া, ন্যায় ও শান্তির বীজ বপন করা।

তার মুখে সত্যের দৃঢ় বিশ্বাস, আচরণে বিনয় এবং দেহভঙ্গিতে আন্তরিকতা ফুটে উঠত—যা তার বার্তাকে বিশ্বাসযোগ্যতা দিত।

ক্ষুধার্তকে আহার দান
ক্ষুধা নিবারণের ব্যবস্থা করা শুধু কোনো দান নয়, এটি মানবতার মূল দায়িত্ব। রাসুল (সা.) শিখিয়েছেন, সমাজে কেউ যেন অনাহারে না থাকে।

সামাজিক আড্ডা, দাতব্য উদ্যোগ কিংবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্যবণ্টনের মাধ্যমে ক্ষুধা কমানোর চেষ্টা করা প্রত্যেকের কর্তব্য।

ক্ষুধা দূর না হলে সমাজে শান্তি আসবে না—এই বোধই তার আহ্বানের কেন্দ্রে ছিল।

 সালাম ও শান্তি ছড়ানোর আহ্বান
নবী (সা.)-এর দ্বিতীয় উপদেশ ছিল সালাম বা শান্তির সম্ভাষণ প্রচার করা। ‘আসসালামু আলাইকুম’ শুধু একটি সম্ভাষণ নয়, এর মাধ্যমে একে-অপরের জন্য শান্তির দোয়া করা হয়।

রাস্তায় চলার পথে, কর্মস্থলে, ক্লাসে বা সামাজিক পরিবেশে আন্তরিক সালাম মানুষে মানুষে সম্পর্ক ও সহমর্মিতা বাড়ায়। অজ্ঞতা ও বিদ্বেষ দূর করে, হৃদয়ে উষ্ণতা আনে।

আল্লাহর একটি নাম হলো ‘আস-সালাম’—অর্থাৎ শান্তি। তাই সালাম প্রচার করা মানে আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশিত শান্তির বার্তা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া।

আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা
পরিবার ও আত্মীয়তার সম্পর্ক সমাজের শান্তির অন্যতম ভিত্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয়তা দুর্বল হয়ে পড়ে, মানুষ একাকী হয়ে যায়। এই বিচ্ছিন্নতা থেকে সতর্ক করেছেন মহানবী (সা.)। দূর–সম্পর্কের আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ বজায় রাখা উচিত। 

এখন প্রযুক্তির যুগে তা আরও সহজ। নিয়মিত যোগাযোগ ও সহযোগিতা আত্মীয়তার বন্ধনকে মজবুত করে, সমাজে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বাড়ায়।

অন্যরা ঘুমালে নামাজ পড়া
নবী (সা.)-এর শেষ পরামর্শ ছিল রাত্রিকালীন ইবাদত। যখন দুনিয়া ঘুমিয়ে থাকে, তখন একান্তে আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটায়।

এই নৈশ ইবাদত বা নামাজই মানুষকে দিনভর সৎ পথে চলতে ও সমাজে কল্যাণমূলক ভূমিকা রাখতে  শক্তি দেয়।

আল্লাহর সঙ্গে গভীর সম্পর্কই মানুষের ভেতরে শান্তি আনে, আর সেই শান্তিই সমাজে প্রতিফলিত হয়।

মদিনায় নবীর (সা.) প্রথম আহ্বানের শিক্ষা
মদিনায় নবী (সা.)-এর প্রথম আহ্বান ছিল—খাওয়ানো, সালাম প্রচার, আত্মীয়তা রক্ষা ও রাত্রিকালীন নামাজ। এই চারটি শিক্ষা আজও মানবতার জন্য দিকনির্দেশনা।

বাস্তব জীবনে আমরা এই শিক্ষা ধারণ করতে পারলে সমাজে যেমন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমনি পরকালে জান্নাতের পথও সুগম হবে। সূত্র: অ্যাবাউট ইসলাম

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]