মেয়েকে নগ্ন করে শাস্তি দেন মা! সইতে না পেরে ঝাঁপিয়ে পডড়ে মৃত্যু

আপলোড সময় : ০৭-১০-২০২৫ ০১:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৭-১০-২০২৫ ০১:৫২:৫৭ পূর্বাহ্ন
একদিকে স্কুলের সেরা ছাত্রী, অন্যদিকে নিজের মায়ের নৃশংস হত্যাকারী। ১৬ বছর বয়সী এমি সেং-এর মামলা একসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনমতকে দ্বিধাবিভক্ত করে তুলেছিল। শেষ পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই তার বিচার হয় এবং মায়ের খুনের দায়ে তাকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ক্যানসাসের ওভারল্যান্ড পার্কের বাসিন্দা এমি সেং ছিল অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি সে ছিল রাজ্যের অন্যতম সেরা ক্ল্যাসিকাল পিয়ানোবাদক এবং একজন প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ। কিন্তু এই সাফল্যের আড়ালেই লুকিয়ে ছিল এক গভীর যন্ত্রণা। জানা গিয়েছে, চিন থেকে আসা অভিবাসী বাবা-মায়ের আকাশছোঁয়া প্রত্যাশার চাপ সে আর নিতে পারছিল না।

নিজের ব্লগে এমি তার অসহনীয় জীবনের কথা লিখত। ভয়াবহ ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগে তার শেষ পোস্টে সে মাকে একটি নুপুর বানিয়ে দেওয়ার কথা লিখেছিল। সে লিখেছিল, "এতে নিজেকে খুব ছোট বলে মনে হচ্ছিল, কিন্তু আমার ধারণা সব বাবা-মা'ই হয়তো এটাই চান। আমি চেষ্টা করে চলেছি ক্রমাগত ওঁদের মুখে হাসি ফোটাতে, ওঁদের ভাল রাখতে, যাতে দুশ্চিন্তার তালিকা থেকে অন্তত এমির নামটা বাদ যায়।

এর ঠিক দশ দিন পরেই, ২০০৫ সালের ১৯ আগস্ট, এমি তার ৫৫ বছর বয়সী মা, শু ই ঝ্যাংকে নৃশংসভাবে খুন করে। তাদের বাড়ির একাধিক ঘরে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল বলে জানা যায়। ঘটনার দিনই এমিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা জেকব হোরউইৎজ, যার সন্তানরা এমির সঙ্গে সামার ক্যাম্পে যেত, এই খবরে স্তম্ভিত হয়ে যান। তিনি জানান, তার ছেলেমেয়েরা বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে তাদের দেখা সেই "মিষ্টি" এবং "বিনয়ী" মেয়েটি এই কাজ করতে পারে।

এই ঘটনা স্থানীয় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। জেকব ইন্টারনেটে এমিকে নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন এবং তার ব্লগটি খুঁজে পান। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, পরের তিন-চার ঘণ্টা আমি ওর সাইটটা পড়ি। পড়া শেষ হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল, খবরের আড়ালে আরও অনেক কিছু রয়ে গিয়েছে।

বিগত তিন বছর ধরে লেখা এমির ব্লগে উঠে আসে এক অন্য ছবি। বাবা-মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে তার উপর নেমে আসত কঠোর শাস্তি। জানা গিয়েছে, এক পরীক্ষায় ৯৬ শতাংশ নম্বর পাওয়ায় তাকে নগ্ন করে ঘরের এক কোণে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। একটি প্রতিযোগিতায় না জিতলে তার সাধের পিয়ানোটি বিক্রি করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। জেকব বলেন, আমার মনে হয়, এটি সাহায্যের জন্য এক চূড়ান্ত আর্তি। আফসোস, অন্য কোনও অভিভাবকের চোখে এটা আগে পড়েনি।

জনসন কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি পল মরিসন বহু সমর্থকের আপত্তি সত্ত্বেও নাবালিকা হিসেবে নয়, প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে এমির বিচার করাতে সফল হন। তিনি বলেন, "কসাইয়ের ছুরি দিয়ে কাউকে কুপিয়ে খুন করার চেয়ে জঘন্য কিছু হতে পারে না। সকলেই মানছেন যে সে তার মায়ের কাছে নিষ্ঠুর ব্যবহার পেয়েছে, কিন্তু এই নৃশংসতাকে কোনও ভাবেই ক্ষমা করা যায় না। মানুষের মনে রাখতে হবে যে সে এক অবিশ্বাস্য রকমের ভয়াবহ অপরাধ করেছে। সে কারাগারে গেলে তার অবিচার হবে এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই।"

২০০৬ সালের ৬ মার্চ, তার ১৭তম জন্মদিনের এক মাস আগে, এমি প্রাপ্তবয়স্কদের আদালতে এই হত্যার কথা স্বীকার করে নেয়। তাকে ন্যূনতম আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খবর অনুযায়ী, টোপেকা সংশোধনাগারে সে ছিল সর্বকনিষ্ঠ মহিলা বন্দী।

খুনের বিশদ বিবরণ খুব বেশি প্রকাশ করা না হলেও, শোনা গিয়েছিল যে মাদকাসক্তি এই ঘটনার একটি কারণ হতে পারে। তবে ‘ক্রাইম মান্থলি’ পত্রিকা অনুযায়ী, টক্সিকোলজি রিপোর্টে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি।

এমির বাবা তাও সেং, মেয়েকে দোষারোপ করতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছিলেন, স্ত্রীকে হারানোর পর তিনি মেয়েকেও হারাতে চান না। ২০১২ সালে এমি জেল থেকে মুক্তি পায় এবং বর্তমানে সে চাকুরিরত বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]