অভাবের তাড়নায় নবজাতক বিক্রির অভিযোগে হাসপাতাল মালিকের কারাদণ্ড, নার্স গ্রেপ্তার

আপলোড সময় : ০২-১০-২০২৫ ০৬:১৩:২৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০২-১০-২০২৫ ০৬:১৩:২৯ অপরাহ্ন
ঝিনাইদহের মহেশপুরে দেনার দায়ে সদ্যপ্রসূত ছেলে সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হওয়া মা সুমাইয়া খাতুনের ঘটনায় অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তারের নেতৃত্বে পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে হাসপাতালের কাগজপত্রে ত্রুটি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে হাসপাতাল মালিক সেলিম রেজা বাবুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে শিশু বিক্রিতে সহযোগিতা করার অভিযোগে নার্স ইসমোতারাকে আটক করেছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার দুপুরে মহেশপুর উপজেলার নেপার মোড়ের পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালেই এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মা সুমাইয়া খাতুন মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের আনছার মোড়ের মৃত আলামিনের স্ত্রী।

সুমাইয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমাইয়া খাতুনের স্বামী আলামীন ৪ মাসের গর্ভবতী থাকা অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর সুমাইয়ার জীবনে চরম সংকট নেমে আসে। স্বামী বা পিতার বাড়িতে কোথাও তাঁর ঠাঁই মেলেনি। অবশেষে তিনি বৃদ্ধা নানির বাড়িতে আশ্রয় নেন।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রসব বেদনা উঠলে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে সুমাইয়াকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় এবং সিজার অপারেশনের মাধ্যমে তিনি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু ক্লিনিকের বিল পরিশোধ এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার কারণে সুমাইয়া সদ্যপ্রসূত সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হন। বিনিময়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ এবং নগদ ৬৫ হাজার টাকা পান তিনি। নার্স ইসমোতারা এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নবজাতকের মা সুমাইয়া খাতুন গণমাধ্যমকে জানান, "স্বামীর মৃত্যুর পর গর্ভাবস্থায় কোথাও ঠাঁই পাইনি। গর্ভবতী অবস্থায় লোকের কাছে ধারদেনা করে চলেছি। ক্লিনিকের খরচ, সন্তান মানুষ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সেই কারণে নবজাতক সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছি।" তিনি আরও বলেন, "যারা দত্তক নিয়েছে তাদের আমি চিনি না, শুধু শুনেছি তাদের বাড়ি কুমিল্লায়।

পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবু গণমাধ্যমকে জানান, "সিজারের পর রোগীর দেখাশোনা ছাড়া আমার করার কিছু নেই। রোগী যদি কারও সাথে আপস করে সন্তান দিয়ে দেয় সেটার জন্য আমি দায়ী নই।

মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, ক্লিনিকের কাগজপত্রে ত্রুটি ও হাসপাতালের পরিবেশ ভালো না থাকায় পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক সেলিমকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং শিশু বিক্রির সহযোগিতাকারী নার্সকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।"

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]