স্ত্রী-সন্তানদের কাছে যেমন ছিলেন মহানবী (সা.)

আপলোড সময় : ২৪-০৯-২০২৫ ০৩:০৭:৫১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৪-০৯-২০২৫ ০৩:০৭:৫১ অপরাহ্ন
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) একজন নবী ছিলেন। তিনি মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতেন। নবী হিসেবে তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া সকল দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খুভাবে পালন করেছেন। 

স্নেহময় স্বামী
একইসঙ্গে তিনি মানব সমাজেরই একজন ছিলেন। অন্য সবার মতো, তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন ছিল। তিনি একজন স্বামী, একজন বাবা ছিলেন। নবুওয়তের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পারিবারিক দায়িত্বও পালন করেছেন যথাযথভাবে। 

নিজের পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন একজন আদর্শ পুরুষ। স্ত্রীদের প্রতি তিনি সব সময় কোমল ও সৌহাদ্যপূর্ণ আচরণ করতেন। তাদের আনন্দ, বিনোদনের প্রতিও খেয়াল রাখতেন। 

তিনি স্ত্রী আয়েশা (রা.)-র সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করেছেন, তাকে বেড়াতে নিয়ে গেছেন এবং অবসরে তার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় এবং কোরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা দিয়েছেন স্ত্রীদের।

আয়েশা (রা.) নবীর কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা যত্নের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। খেলাধুলা দেখতে চাইলেও নবী (সা.) তার পাশে থেকেছেন।

আয়েশা ছাড়াও অন্যান্য স্ত্রীদের প্রতিও তিনি ছিলেন সমান আন্তরিক ও সদয়। নবী (সা.)-র কোমল আচরণ দেখে হজরত ওমর (রা.) পর্যন্ত অবাক হয়েছিলেন। ওমর (রা.) ঘরে ঢুকলে নবীর স্ত্রীগণ আড়ালে যেতেন এবং বলতেন— ওমর (রা.)-র স্বভাব কঠোর, কিন্তু নবী (সা.)-র স্বভাব ছিল অত্যন্ত নম্র।

পরিবারের দায়িত্ব পালনে নবী (সা.) কখনো অবহেলা করেননি। তিনি নিজ হাতে ঘরের কাজ করেছেন, ছেঁড়া পোশাক সেলাই করেছেন। রাসুল (সা.)-এর একাধিক স্ত্রী ছিল। তিনি সবার সঙ্গে সুবিচার ও কোমল সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। জীবনের টানাপোড়েনে কখনো স্ত্রীর ওপর হাত তোলেননি।

আদর্শ পিতা
তৎকালীন আরব সমাজে কন্যা সন্তানকে অভিশাপ মনে করা হতো। মহানবী (সা.) সেই সমাজে চার কন্যাকে আদর-যত্ন ও পরম স্নেহে লালন-পালন করেছেন। তাদের শিক্ষাদান করেছেন, আল্লাহভীরু স্বামীদের সঙ্গে তাদের বিবাহ দিয়েছেন।

তিনি মেয়ে ফাতিমা (রা.)-কে এতোটাই ভালোবাসতেন যে, সন্তানসম্ভবা ফাতিমা (রা.)-র খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য প্রায় তিনি তার বাড়িতে যেতেন। তিনি পরিবারের প্রতি এতোটাই কোমল ছিলেন যে, নামাজে থাকা অবস্থায় নাতিরা তার পিঠে চড়ে খেলেছে।

সাহাবারা বলতেন, ফাতিমা (রা.)-ই নবী (সা.)-র চেহারা ও আচার-আচরণের সবচেয়ে কাছাকাছি ছিলেন। ফাতিমা (রা.) নবী (সা.)-র ঘরে ঢুকলে তিনি উঠে দাঁড়াতেন, তাকে চুম্বন করতেন এবং নিজের আসনে বসাতেন। ফাতিমা (রা.)-ও বাবার জন্য একই কাজ করতেন।

নবী (সা.) জীবনের কঠিন সময়েও সন্তানদের হারানোর বেদনা সহ্য করেছেন। তার দুই ছেলে মক্কায় এবং এক ছেলে মদিনায় ইন্তেকাল করেছেন। শত্রু আবু লাহাব এই মৃত্যুতে খুশি হলেও নবী (সা.) স্বাভাবিকভাবেই কেঁদেছেন। তখন আল্লাহ তায়ালা সূরা কাউসার নাজিল করে তাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন ।

বিদায়ী উপদেশ
বিদায়ী খুতবায় নবী (সা.) পুরুষদের স্ত্রীদের প্রতি সদয় হতে বলেছিলেন। তিনি বলেছেন—

‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় করো। তারা আল্লাহর আমানত হিসেবে তোমাদের কাছে এসেছে। তোমাদের দায়িত্ব তাদেরকে সম্মানের সঙ্গে আহার ও বস্ত্র দেওয়া। তাদের প্রতি সদাচরণ করো। তারা তোমাদের সহযোগী ও সহচরী।

নারীর মর্যাদা উন্নত করা, মাতৃত্বকে সম্মান দেওয়া এবং জ্ঞানের মাধ্যমে সমাজকে সমৃদ্ধ করার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।

পরিবারে একজন পুরুষ অভিভাবকের নেতৃত্ব ও পিতৃত্ব নিয়ে কোরআনে যেসব বার্তা দেওয়া হয়েছে, নবীজি (সা.) তা নিজ জীবনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করেছেন— পরিবারে দায়িত্বশীল, দয়ালু ও ন্যায়ের দৃষ্টান্ত স্থাপনের মাধ্যমে একজন পুরুষ প্রকৃত অর্থে তার জীবনকে স্বার্থক করতে পারেন। সূত্র: অ্যাবাউট ইসলাম

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]