কিয়ামতের দিন জালিমের যে পরিণতি হবে

আপলোড সময় : ১৬-০৯-২০২৫ ০৫:১৬:৩২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৬-০৯-২০২৫ ০৫:১৬:৩২ অপরাহ্ন
অন্যায় ও জুলুম একটি ভয়াবহ অপরাধ। এর পরিণতি করুণ হয়ে থাকে। জালিম ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা পরকালে কঠিন শাস্তি দেবেন। তবে অনেক সময় পৃথিবীতেই জালিম ব্যক্তি ভয়াবহ ও দৃষ্টান্তমূলক পেয়ে থাকেন। অন্যদের সর্তক করতেই আল্লাহ তায়ালা জালিমকে কঠিন পরিণতির মুখোমুখি করেন। 

রাসুল (সা.) জালিম ব্যক্তিকে মজলুমের অসহায় অর্তনাদ থেকে বেঁচে থাকতে বলেছেন। কারণ, আল্লাহ কখনো মজলুমের ফরিয়াদ ফিরিয়ে দেন না। ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মুয়াজ (রা.)-কে ইয়ামানে পাঠান তাকে বলেন, মজলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কারণ, তার ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা থাকে না। (সহিহ বুখারি)

আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুলুম নিয়ে হাশরের মাঠে উপস্থিত হবে তার মত হতভাগা আর কেউ নেই। কারণ, সে প্রত্যেক মজলুমকে তার হক বুঝিয়ে দিতে থাকবে, শেষ পর্যন্ত যখন আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না তখন তার ওপর অপরের গুনাহের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে। 

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা জুলুম থেকে বেঁচে থাক; কারণ, জুলুম কিয়ামতের দিন প্রগাঢ় অন্ধকার হিসেবে দেখা দিবে।’(মুসলিম, হাদিস : ২৫৭৮)

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, প্রত্যেক ব্যক্তি তার প্রাপ্য অধিকার প্রাপ্ত হবে। এমনকি যদি কোন শিংবিশিষ্ট ছাগল কোন বিনা শিং-এর ছাগলের উপর অত্যাচার করে থাকে, তাহলে তারও বদলা দেওয়া হবে। ( মুসনাদে আহমাদ) 

জুলুমের পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, 

وَ عَنَتِ الۡوُجُوۡهُ لِلۡحَیِّ الۡقَیُّوۡمِ ؕ وَ قَدۡ خَابَ مَنۡ حَمَلَ ظُلۡمًا

আর চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত-সর্বসত্তার ধারকের কাছে সবাই হবে নিম্নমুখী এবং সে-ই ব্যর্থ হবে, যে জুলুম বহন করবে। (সুরা ত্বহা, আয়াত : ১১১)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা কি জান, নিঃস্ব কে?’ সাহাবিরা বললেন, ‘যার কাছে কোনো দিনার-দিরহাম এবং কোনো আসবাব-পত্র নেই সেই তো নিঃস্ব।’ 

তিনি বললেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে (প্রকৃত) নিঃস্ব তো সেই ব্যক্তি, যে কিয়ামতের দিন নামাজ, রোজা, জাকাতের (নেকি) নিয়ে উপস্থিত হবে। এ সময় তার অবস্থা এমনও থাকবে যে, সে দুনিয়াতে কাউকে গাল দিয়েছে। কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করেছে, অবৈধ উপায়ে কারো সম্পদ ভোগ করেছে। কাউকে হত্যা করেছে এবং কাউকে মেরেছে। তখন তার সব নেকি এই অত্যাচারিত ব্যক্তিদের দিয়ে দেওয়া হবে।

এরপরও যদি পাওনাদারের হক তার নেক আমল থেকে পূরণ করা না যায়, তাহলে সে ঋণের পরিবর্তে তাদের পাপের একাংশ তাকে দিয়ে দেওয়া হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ৬৪৭৩)

এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, কিয়ামতের দিন কোনো ব্যক্তি হয়তো নামাজ, রোজা, জাকাত আদায়ের বিশাল সওয়াব নিয়ে উপস্থিত হবে, কিন্তু এই ব্যক্তির নেক আমলের সওয়াব আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচাতে তার কোনো কাজে আসবে না।

কারণ, সে ইবাদত পালন করলেও দুনিয়াতে মানুষের সঙ্গে তার ব্যবহার আচার ঠিক ছিল না, সে তার প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে হয়তো কাউকে অন্যায়ভাবে গালি দিয়েছে আবার কাউকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। কিন্তু অত্যাচারিত ব্যক্তিরা দুর্বল হওয়ার কারণে দুনিয়াতে তাকে কিছু বলতে পারেনি, কোনো প্রতিশোধ নিতে পারেনি, পরকালে তারা আল্লাহর কাছে এর বদলা চেয়ে নেবে। তখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে পুরোপুরো ইনসাফের সঙ্গে তাদের ওপর হওয়া অন্যায়ের বদলা ফিরিয়ে দেবেন। এবং অত্যাচারী ব্যক্তিকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে তার অন্যায়ের কারণে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]