শরীয়তপুরে ৪০ মিনিট অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখলো সিন্ডিকেট, ভেতরে নবজাতকের মৃত্যু

আপলোড সময় : ১৫-০৮-২০২৫ ১১:৫০:০২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৫-০৮-২০২৫ ১১:৫০:০২ অপরাহ্ন
শরীয়তপুরে রোগী বহনকারী একটি অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখার কারণে অসুস্থ অবস্থায় ভেতরে থাকা এক নবজাতকের মৃত্যু ঘটেছে। এ ঘটনার পেছনে শরীয়তপুরের অ্যাম্বুলেন্স চালক সিন্ডিকেটের দায়ী করছে ওই শিশুর পরিবার। অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে ফরিদপুরের  নিউ মেট্রো ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালের সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রোগীর স্বজন এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদারের স্ত্রী রুমা বেগম সন্তান সম্ভবা ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে জেলার নিউ মেট্রো ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তার একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। তবে জন্মের পর থেকেই শিশুটি কিছুটা ঠান্ডার সমস্যায় ভুগছিল।

পরে হাসপাতালের চিকিৎসক পরামর্শ অনুযায়ী শিশুটিকে ঢাকায় আনার চেষ্টা করে পরিবার। ৫ হাজার টাকায় ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন। সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে স্থানীয় দুই ব্যক্তি (অ্যাম্বুলেন্স চালক সবুজ দেওয়ান ও আবু তাহের দেওয়ান) গাড়িটির গতিরোধ করেন। তারা অন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্সকে ঢাকায় যেতে দিতে রাজি ছিলেন না।

একপর্যায়ে তারা ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাবি কেড়ে নেন এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে থাকেন। রোগীর পরিবারের লোক বাধা দিলে তাদেরও লাঞ্ছিত করা হয়। ৪০ মিনিট ধরে গাড়িটি আটকে রাখার পর শিশুটি মারা যায়।

রোগীর স্বজন রানু আক্তার বলেন, ‘আমরা তাদের অনেকবার অনুরোধ করেছিলাম গাড়িটিকে ছাড়ার জন্য, কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি। চালকের কলার ধরে গাড়ির চাবি নিয়ে গেছে, পরে আমাদের বাচ্চাটি মারা যায়। ওদের সিন্ডিকেটের জন্যই আমাদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

শিশুটির নানি সেফালী বেগম বলেন, ‘আমার নাতিকে ঢাকায় নিতে পারলে বেঁচে যেত। ওরা আমার নাতিকে বাঁচতে দেননি। ওদের জোরাজুড়িতে আমার নাতির মুখ থেকে অক্সিজেন খুলে গেছে। আমি চাই, ওদের বিচার হোক।’

মারধরের শিকার অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মোশারফ মিয়া বলেন, আমি ঢাকা থেকে রোগী নিয়ে ফরিদপুরে এসেছিলাম। ওই ট্রিপ নামিয়ে দিয়ে মেডিকেলে সামনে গাড়িটা সাইড করি। এর মধ্যে আমার পরিচিত একজন একটি ঢাকার উদ্দেশ্যে একটি ট্রিপ দেয়। কিন্তু যখন আমি ওই ট্রিপের যাত্রীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম স্থানীয় কিছু অ্যাম্বুলেন্স চালক এসে আমার গাড়ির গতিরোধ করে এবং আমাকে বলে এই ট্রিপ আমি নিতে পারবো না। আমি তাদেরকে বললাম, আপনাদের ঝামেলা থাকলে তাদের নামিয়ে নিন কিন্তু রোগীর অবস্থা ভালো না। দ্রুত ঢাকায় নিতে হবে। তখন ভেতর থেকে স্বজনরা বলে উঠলো আমরা এ গাড়িতেই যাবো। একপর্যায়ে তারা আমার গাড়ির চাবি নিয়ে যায় ও আমাকে মারধর কর। এভাবে ৪০ মিনিট পর নবজাতকটি মারা যায়।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]