তানোরের অমৃতপুর মাদরাসার এমপিও বন্ধের দাবি

আপলোড সময় : ১২-০৮-২০২৫ ০৫:৫৭:৪২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১২-০৮-২০২৫ ০৫:৫৭:৪২ অপরাহ্ন
রাজশাহীর তানোরের কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) অমৃতপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষকদের এমপিও বন্ধের দাবি করেছেন এলাকার শিক্ষানুরাগী সচেতন মহল। চলতি বছরে এসএসসি-দাখিল পরীক্ষায় মাদরাসার কোনো শিক্ষার্থী কৃতকার্য না হওয়ায় তারা এই দাবি তুলেছেন। এবার প্রতিষ্ঠান থেকে একজনও শিক্ষার্থীও পাশ না করাই ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষের  সৃষ্টি হয়েছে অবিভাবকদের মধ্যে।

জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে  দাখিল পরীক্ষায় ১৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। বাকি ১৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকলেই অকৃতকার্য হয়েছেন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১০ জন ও মানবিক বিভাগ থেকে ৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ৬ জন অংকে বাকিরা পদার্থ, রষায়ন ও কোরআন হাদিসে অকৃতকার্য হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, মাদ্রাসার উত্তর ও দক্ষিণে মাটির ঘর। পশ্চিমে একতলা পাকা ভবন। পাকা ভবনটি অফিস কক্ষ। নেই কোন বিজ্ঞানাগার ও লাইব্রেরি। সেখানে শিক্ষকরা বসে ছিলেন। কিন্তু সুপার ছিলেন না। তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান সহসুপার সাইদুর রহমান। তার কাছে দাখিল পরীক্ষার ফলাফলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ১৪ জন পরিক্ষার্থী ফরম পুরন করলেও ১৩ জন অংশ নিয়েছিলেন। কেউ পাশ করতে পারেনি।

কি কারনে পাশ করতে পারেনি জানতে চাইলে তিনি জানান, রষায়ন ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নেই। কিন্তু গণিতে ফেল করেছে জানতে চাইলে  তিনি জানান, গণিতের শিক্ষক বিজ্ঞান রষায়ন বিষয়ে পাঠদান দেয়। মাদ্রাসায় হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল। নবম শ্রেণীতে তিনজন শিক্ষার্থী ছিল তারা মোবাইলে গেম খেলছিল। তারাও জানান, নিয়মিত ক্লাস হয় না। এজন্য একজন শিক্ষার্থী পাশ করেননি।

সহসুপার সাইদুর রহমান আরো জানান, মাদ্রাসায় শিক্ষক রয়েছে ১৫ জন ও কর্মচারী রয়েছে ৪ জন মোট ১৯ জন। এবতেদায়ীসহ ১৫ জন শিক্ষক আছে। ৪ জন শিক্ষক নেই। বিজ্ঞান একজন, বিপিএড একজন ও সহকারী মাওলানা ২ জন শিক্ষক প্রয়োজন। 

অভিভাবকগণ প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে করে বলেন, মাদরাসার ১৫ জন শিক্ষকের পিছনে  প্রতিমাসে সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছেন। অথচ তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত না হয়ে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। আবার যদি মাদরাসায় উপস্থিত হন তাহলে পাঠদান না করিয়ে রাজনৈতিক চর্চা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তারা ঠিকমতো শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করান না। প্রতিষ্ঠানে এসে বসে আড্ডা দিয়ে চলে যাই তবুও দেখার কেই নাই। দিনের পর দিন এভাবে চলছে মাদরাসার কার্যক্রম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের এক জৈষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এটি তাদের নজরে এসেছে। তিনি বলেন, মাদরাসা সুপারকে শোকজ করা হবে এবং শোকজের জবাব দেবার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এবিষয়ে মাদরাসার সুপার আব্দুল বারীর সঙ্গে মুঠোফোনে  যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি রাজশাহী মেডিকেল যাচ্ছি।  সব পরিক্ষার্থী কিভাবে  ফেল করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এসব বিষয়ে পরে কথা বলবো। গত দুদিন বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি বাবুল হোসেন  জানান, সুপার অসুস্থ, আমি এসব বিষয়ে দুবার মিটিং করেছি। সবাই ফেল করেছে এটা দু:খ্যজনক।

এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, সুপার খুব ফাঁকিবাজ, সে মাদ্রাসায় যায় না। পরীক্ষা কেন্দ্রে একটু কড়া কড়ি হয়েছে আর সবাই অংকে ফেল করেছে। এর দায় সুপার আব্দুল বারীর। তার সব সময় অসুখ। আওয়ামী সরকারের সময়ে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর রেজা আত্মীয় পরিচয় দিয়ে সুপার নিজের খেয়ালখুশি মতো চলেছে। মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যেখানে লিখা দরকার সেখানে দেয়া হবে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এবিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  (ইউএনও) লিয়াকত সালমানের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]