এক বছর বয়সী বাচ্চার কামড়ে সাপের মৃত্যু

আপলোড সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ০২:০২:১২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ০২:০২:১২ অপরাহ্ন
বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু- এরকম খবর আশ্চর্যের কিছু না। কিন্তু শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যু? এ রকম ঘটনা শোনা না গেলেও সত্যিই একটি শিশু কামড়ে মেরে ফেলেছে আস্ত একটা সাপ। তাও আবার কোবরা। 

ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। বিবিসির এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে।

"শিশুর মা তখন ঘরের পিছন দিকে কাজ করছিলের। চুলা জ্বালানোর কাঠগুলো গুছিয়ে রাখছিলেন সে। পাশেই খেলছিল গোবিন্দ। তখনই সাপটা বেরিয়ে আসে। সাপটাকে দেখেই গোবিন্দ সেটাকে ধরে এক কামড় বসিয়ে দেয়। তখনই আমরা সবাই খেয়াল করি যে ওটা একটা গেহুঁওন সাপ" কথাগুলো বলছিলেন মতিসারি দেবী।

কোবরা সাপকে স্থানীয়ভাবে গেহুঁওন সাপ বলা হয় বিহারের ওই অঞ্চলে।

মতিসারি দেবীর এক বছর বয়সী নাতি গোবিন্দ গত বৃহস্পতিবার একটা আস্ত কোবরা সাপ কামড়ে মেরে ফেলে এখন খবরের শিরোনামে চলে এসেছে।

বিহারের পশ্চিম চম্পারন জেলার এক ছোট গ্রাম মোহছি বনকাটোয়ার বাসিন্দা গোবিন্দর পরিবার। তার বাবা সুনীল সাহ গ্রামে ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করেন।

মতিসারি দেবী বলছিলেন, "দাঁত দিয়ে সাপটাকে কামড় দেওয়ার পর কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল গোবিন্দ। ওকে আমরা প্রথমে মঞ্ঝোলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ওকে বেতিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। এখন বাচ্চা সুস্থ আছে।"

মঞ্ঝোলিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক নেয়াজ বলছিলেন, "শিশুটি শনিবার সন্ধ্যাবেলাতেই বাড়িতে ফিরে এসেছে। ওকে নিয়ে সবাই খুব আলোচনা করছে। শ্রাবণ মাসে সাপ বেরানোটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু এরকম ঘটনা আমাদের এলাকায় প্রথম হল।"

এক বছরের শিশু গোবিন্দকে বৃহস্পতিবারই সন্ধ্যায় বেতিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার চিকিৎসা করেছিলেন শিশু রোগ বিভাগের ডা. কুমার সৌরভ।

তার কথায়, "শিশুটিকে যখন ভর্তি করার জন্য আনা হয়েছিল, তখন ওর চেহারা একটু ফুলে গিয়েছিল। মুখের আশপাশটা ফোলা ছিল। বাড়ির লোক আমাদের জানায় যে সাপের মুখের পাশে কামড় দিয়েছিল শিশুটি আর সাপের দেহের কিছুটা বোধহয় খেয়েও ফেলেছিল।”

"আমার হাতে একই সময় দুটি শিশু রোগী ছিল তখন। একটি শিশুকে কোবরা সাপ কেটেছিল আর এই শিশুটি সাপকেই কামড়ে দিয়েছিল। দুটি শিশুই সম্পূর্ণ সুস্থ আছে এখন," বলছিলেন ডা. সৌরভ।

তিনি আরও জানালেন, "কোবরা সাপ যখন মানুষকে ছোবল মারে তখন তার বিষ আমাদের রক্তে চলে যায়। রক্তে বিষ মিশে যাওয়ার ফলে নিউরোটক্সিসিটি হয়, আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। এর থেকে মৃত্যুও হতে পারে।”

"আবার যখন কোনো মানুষ কোবরা সাপকে কামড়িয়ে দেয়, তখন মুখ দিয়ে ওই বিষ আমাদের পাচন তন্ত্রে চলে যায়। মানবদেহ ওই বিষকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়, আর বিষটা বেরিয়ে যায়। অর্থাৎ সাপের বিষ দুভাবে কাজ করে। এক হল বিষ আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে অন্যটি হল মানব শরীর বিষটি নিষ্ক্রিয় করে দেয়," ব্যাখ্যা ডা. সৌরভের।

কিন্তু কোনো মানুষ যদি সাপকে কামড়ে দেয় আর সেই ব্যক্তির খাদ্যনালীতে কোনো আলসার বা অন্য ক্ষতস্থান থাকে যা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর সারা পৃথিবীতে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ৩০ হাজার পর্যন্ত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যান। ভারতে ওই সংখ্যাটা প্রায় ৫৮ হাজার। এজন্যই ভারতকে 'সর্প-দংশনের রাজধানী' বলা হয়ে থাকে।

বিহারের রাজ্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থাপনায় দেওয়া তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে যে, ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত ওই রাজ্যে সাপের কামড়ে ৯৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]