গাজায় ক্ষুধার্ত ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

আপলোড সময় : ০৬-০৭-২০২৫ ০৪:০৬:৫১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৬-০৭-২০২৫ ০৪:০৬:৫১ অপরাহ্ন
গত কয়েক সপ্তাহে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খাবারের খোঁজে বের হওয়া ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি-সমর্থিত বিতর্কিত সাহায্য প্রকল্প নিয়ে নতুন করে নিন্দার জন্ম দিয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, শনিবার (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তথাকথিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে সহায়তা চাইতে গিয়ে আরও অন্তত ৪ হাজার ৮৯১ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

মে মাসের শেষের দিকে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত গাজায় কার্যক্রম শুরু করা জিএইচএফ-এর ঠিকাদারদের পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনীও ত্রাণ নিতে যাওয়া ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলবর্ষণ করেছে। এমন একাধিক প্রতিবেদনের মধ্যে সংস্থাটি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

গাজা সিটি থেকে রিপোর্টিং করা আল জাজিরার সংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, ইসরায়েলের গাজা অবরোধের ফলে সৃষ্ট তীব্র সংকটের মধ্যে ফিলিস্তিনিরা তাদের পরিবারের সদস্যদের খাওয়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। তাই ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'মানুষ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ছে। মানুষ রেশনিং করে খাবার পাচ্ছে। অনেক পরিবার খাচ্ছে না। এখানকার মায়েরা তাদের সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য নিজেরা খাবার এড়িয়ে যান।'

এই সপ্তাহের শুরুতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সংবাদ সংস্থা একটি প্রতিবেদনে মার্কিন ঠিকাদারদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, জিএইচএফ বিতরণ পয়েন্টে সাহায্য চাইতে আসা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর তাজা গোলাবারুদ এবং স্টান গ্রেনেড ছোঁড়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মার্কিন ঠিকাদার এপিকে জানিয়েছেন, ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত কর্মীরা যা খুশি তাই করছেন বলে মনে হচ্ছে।

তবে জিএইচএফ এপির প্রতিবেদনকে 'স্পষ্টতই মিথ্যা' বলে অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা 'সাইটগুলোর নিরাপত্তা এবং সুরক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়'।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনও জিএইচএফের পাশে দাঁড়িয়েছে। বুধবার পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, এরাই একমাত্র সত্তা যারা গাজা উপত্যকায় খাদ্য ও সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে।

নেতৃস্থানীয় মানবিক ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো জিএইচএফ-এর কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানিয়েছে। কেননা তারা 'দুই মিলিয়ন মানুষকে জনাকীর্ণ, সামরিকীকরণ অঞ্চলে আটকে থাকতে বাধ্য' করেছে। সেখানেও তারা প্রতিদিন গুলিবর্ষণ এবং ব্যাপক হতাহতের সম্মুখীন হচ্ছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই মার্কিন ইসরায়েল সমর্থিত জিএইচএফ-এর কার্যক্রমকে 'অমানবিক এবং মারাত্মক সামরিকীকরণ পরিকল্পনা' হিসেবে বর্ণনা করেছে।

অ্যামনেস্টি বলেছে, সংগৃহীত সমস্ত প্রমাণ, যার মধ্যে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভুক্তভোগী এবং সাক্ষীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সাক্ষ্যও নিয়েছে- এটি ইঙ্গিত দেয়, জিএইচএফ আন্তর্জাতিক উদ্বেগগুলোকে নিস্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, একই সাথে ইসরায়েলের গণহত্যার আরেকটি হাতিয়ার ছিল।'

তবুও ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য মানবিক সরবরাহের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি হয়ে গাজার অনেক ফিলিস্তিনি বলেছেন, ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, তাদের কাছে ওই গোষ্ঠীর কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

জিএইচএফ সাইটে হামলায় আহত ফিলিস্তিনি ব্যক্তি মাজিদ আবু লাবান আল জাজিরাকে বলেন, 'আমার বাচ্চারা টানা তিন দিন ধরে না খেয়ে থাকার কারণে আমি সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছিলেম। আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নেতজারিমে (একটি সাহায্য বিতরণ কেন্দ্রে) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেম। আমি মধ্যরাতে রাস্তা ধরেছিলাম কিছু খাবার পাওয়ার আশায়। জনতা ছুটে আসতেই ইসরায়েলি বাহিনী আমাদের দিকে কামানের গোলা ছুড়ল। বিশৃঙ্খলার মধ্যে, সবাই কেবল বেঁচে থাকার চেষ্টা করছিল।'

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]