শূন্যে খুলে যায় অস্ত্র-মুখ, ছড়িয়ে পড়ে শক্তিশালী অজস্র বোমা! ইজ়রায়েলে এই প্রথম ‘ক্লাস্টার বম্ব’ ছুড়ল ইরান, বিশেষত্ব কী

আপলোড সময় : ২০-০৬-২০২৫ ০৯:০৪:৪৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২০-০৬-২০২৫ ০৯:০৪:৪৮ অপরাহ্ন
ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘাতে ‘ক্লাস্টার বম্ব’ ব্যবহার করেছে ইরান। ১৯ জুনের হামলায় তেল আভিভের আজ়োর শহরতলিতে ওই বোমা পড়েছে। তাতে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে হতাহতের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি কর্তৃপক্ষ। ক্লাস্টার বোমার ব্যবহার এর আগেও বিভিন্ন যুদ্ধে দেখা গিয়েছে। অনেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও এই অস্ত্রকে ভয়ানক বলে মনে করেন। কারণ, এর মাধ্যমে কোনও একটি জায়গায় নয়, একসঙ্গে একাধিক জায়গায় একাধিক হামলা চালানো যায়। ক্ষতির পরিমাণও হয় তুলনামূলক বেশি। ক্লাস্টার বোমায় যে কোনও শহরে সাধারণ মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকে। ইরানের পদক্ষেপে তাই উদ্বেগ বেড়েছে। তাদের হামলার পরেই জনসাধারণের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে ইজ়রায়েল সরকার।

কী এই ক্লাস্টার বোমা?

ইংরেজিতে ‘ক্লাস্টার’ শব্দের অর্থ ‘একগুচ্ছ’। ক্লাস্টার বোমার মধ্যে আসলে থাকে একগুচ্ছ ছোট ছোট বোমা। ছোট, কিন্তু শক্তিশালী। একটি বড় ক্ষেপণাস্ত্রের মোড়কে ওই ছোট বোমাগুলি ভরা থাকে। উৎক্ষেপণের পর শূন্যেই খুলে যায় ক্লাস্টার বোমার অস্ত্র-মুখ। ভিতর থেকে ছোট ছোট বোমাগুলি বেরিয়ে আসে এবং বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ইরানের ১৯ জুনের হামলার পর ইজ়রায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, মাটি থেকে সাত কিলোমিটার উচ্চতায় ওই অস্ত্রের মুখ খুলেছিল। তা থেকে বেরিয়ে এসেছিল অন্তত ২০টি বোমা। সেগুলি মধ্য ইজ়রায়েলের বিভিন্ন প্রান্তে আট কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

ক্লাস্টার বোমার আরও একটি বিশেষত্ব হল, এর মধ্যে থাকা ছোট বোমাগুলির কোনও কোনওটি মাটিতে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ফাটে না। কোনও কিছুর সংস্পর্শে এলে তবেই ঘটে বিস্ফোরণ। অর্থাৎ, জনবহুল এলাকা না হলে এবং কিছুর সংস্পর্শে না এলে দীর্ঘ দিন পর্যন্ত এই বোমা সক্রিয় থেকে যেতে পারে।

ক্লাস্টার বোমা নিয়ে বিতর্ক কেন?

নির্বিচারে ধ্বংস করতে সক্ষম ক্লাস্টার বোমা। এক বার ছোড়া হলে কোথায় পড়ছে, তাতে কার ক্ষতি হচ্ছে, তা আর নিয়ন্ত্রণ করার কোনও উপায় নেই। মাটিতে দীর্ঘ ক্ষণ অবিকৃত এবং অবিস্ফারিত অবস্থায় তা পড়ে থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিশেষত্বই ক্লাস্টার বোমাকে কখনও কখনও ব্যালিস্টিক মিসাইলের চেয়েও ভয়ানক করে তোলে। মাটিতে আছড়ে পড়ার পরেও না ফাটলে সেই বোমা সম্পর্কে অনেকে অবহিত না-ও থাকতে পারেন। রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময়ে অজান্তেই কেউ তার সংস্পর্শে চলে আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে।

ইরানের হামলার পর ইজ়রায়েলের হোম ফ্রন্ট কমান্ড জনস্বার্থে একটি বিবৃতি জারি করে। তাতে বলা হয়, ‘‘সকালে আমরা এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখোমুখি হয়েছি, যা বিস্তীর্ণ এলাকায় ছোট ছোট অস্ত্র ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। কিছু অস্ত্র এখনও সক্রিয় হিসাবে রাস্তায় পড়ে থাকতে পারে। ফলে রাস্তায় পড়ে থাকা কোনও বস্তুতে হাত দেবেন না। সন্দেহ হলেই আপৎকালীন নম্বরে ফোন করে খবর দিন।’’

ক্লাস্টার বোমা কি নিষিদ্ধ?

ইজ়রায়েলি বাহিনীর এক শীর্ষকর্তা টাইম্‌স অফ ইজ়রায়েলকে জানিয়েছেন, ক্লাস্টার বোমার মধ্যে যে ছোট ছোট বোমাগুলি থাকে, একক বোমা হিসাবে তা খুব একটা ভয়ানক নয়। কিন্তু একসঙ্গে এতগুলি বোমা পড়লে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশি। ইরানের অন্যান্য ব্যালিস্টিক মিসাইলের চেয়েও এগুলি ভয়ানক, বিশেষত জনবহুল এলাকায়। ২০০৮ সালে ‘কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশন’ নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়েছিল। তাতে ক্লাস্টার বোমার সংরক্ষণ, পরিবহণ বা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১১১টি দেশ এবং ১২টি সংগঠন এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু আমেরিকা, ইজ়রায়েল, ইরানের মতো প্রধান সামরিক শক্তিগুলি এই চুক্তিতে সম্মত হয়নি। ২০২৩ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে হামলার জন্য ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমার জোগান দিয়েছিল আমেরিকা।

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]