অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ: মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায়

আপলোড সময় : ১৪-০৬-২০২৫ ০২:০১:৪৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৪-০৬-২০২৫ ০২:০১:৪৪ পূর্বাহ্ন
মা — যে শব্দে লুকিয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নির্ভরতা আর আত্মত্যাগ। সেই মাকেই যখন আপন সন্তান বারান্দায় ঠাঁই দেয় না, তখন প্রশ্ন ওঠে আমাদের মানবতা, পারিবারিক মূল্যবোধ ও বিবেক নিয়ে।

রাজশাহী নগরীর রাজাহাটা এলাকার ৭৫ বছর বয়সী হোসনে আরা আজ আশ্রয় খুঁজছেন নিজেরই মৃত স্বামীর ভিটেমাটিতে। অভিযোগ, বড় মেয়ে আলম আরা দিনু (৫০) ও জামাতা আব্দুল মালেক বাবু (৬০) পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, তার ঘরটিও নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি থাকেন খোলা বারান্দায়—যেখানে ঈদের সময় বলেছে গরুর জায়গা হবে, মায়ের নয়!

মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায় বুধবার (১২ জুন) বোয়ালিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ছোট মেয়ে আনজিল আরা। তিনি জানান, “আমার বাবার রেখে যাওয়া বাড়িতে তিনটি রুম। একটি রুমে মা থাকতেন, বাকি দুটি রুম গোডাউন ভাড়া দিয়ে বড় বোন ও দুলাভাই আয় করতেন। এখন তারা মায়ের ঘরটিও ভেঙে ফেলেছে। মা এখন বারান্দায় থাকেন—এই রোদ-বৃষ্টির মধ্যে!”

তিনি আরও বলেন, “ঈদের আগে বলে দিয়েছে মা যেন চলে যান, গরুর জায়গা দরকার! এ কথাগুলো একজন সন্তান কিভাবে বলতে পারে?” চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি আনজিল আরা।

অভিযুক্ত আব্দুল মালেক বাবু কেবল বলেছেন, “সাক্ষাতে কথা বলবো।”

বোয়ালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানান, “বিষয়টি আপোষ-মীমাংসার চেষ্টায় রয়েছে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ব্যাপারে এডভোকেট রজব আলী বলেন,বাংলাদেশের সংবিধান ও দণ্ডবিধি অনুযায়ী, মা-বাবাকে অবহেলা বা নির্যাতন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। বিশেষ করে ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী, অবহেলা করলে সন্তানদের জরিমানা ও কারাদণ্ড হতে পারে।

আর ধর্মীয় ও সামাজিক দিক থেকে দেখলেও মা-বাবার প্রতি দায়িত্বপালন শুধু কর্তব্য নয়, চরমতম দায়িত্ব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী জেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, একজন মা—যিনি সন্তানদের না খেয়ে খাইয়েছেন, না ঘুমিয়ে জেগেছেন—আজ নিজের শেষ বয়সে আশ্রয়ের জন্য লড়ছেন। ঘরের বারান্দায় ঠাঁই নেই, ঘরের মানুষদের হৃদয়ে জায়গা নেই!

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, এটি একটি সমাজের বিবেকের প্রতিচ্ছবি। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? সন্তানদের কাছে মা এখন কি বোঝা হয়ে গেছে?

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]