ফুলবাড়ীতে ভ্যাপসা গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

আপলোড সময় : ১০-০৬-২০২৫ ০৮:৩৯:৫৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-০৬-২০২৫ ০৮:৩৯:৫৫ অপরাহ্ন
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চলমান তীব্র গরমে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদ ও ভ্যাপসা গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে। দিনের বেলায় সূর্যের প্রচণ্ড তাপে বাইরে বের হওয়া কঠিন হলেও রাতের শেষভাগে আবার কম্বল কিংবা কাঁথা গায়ে জড়াতে হচ্ছে। বিরল এক আবহাওয়া বৈপরীত্য।

এই প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট যোগ হয়ে ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। টিউবওয়েল ও সেচযন্ত্রে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারও পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এমন দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে।

তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় ভ্যাপসা গরমের কারণে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। রিকশা ও ভ্যানচালকরা কিছুক্ষণ চালিয়ে আবার ছায়ায় গিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ বিকেলে তাপমাত্রা কমলে বাহির হচ্ছেন জীবিকার তাগিদে।

ফুলবাড়ী পৌর শহরের কাঁটাবাড়ী গ্রামের ৬৩ বছর বয়সী রিকশাচালক সিঙ্গেল জয়সোয়াল বলেন, ‘বয়সের কারণে রোদে বের হতে পারি না, কিন্তু সংসার তো থেমে নেই। বাধ্য হয়ে বিকেল হলেই রিকশা নিয়ে বের হই।’

এদিকে গরমের দাপটে শহরের হাটবাজারে বাড়ছে শরবতের চাহিদা। প্রায় সব বাজারেই ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকান দেখা যাচ্ছে। আখের রস, তোকমা, এলোভেরা, পাকা বেল, শিমুলের মূল, হরতকি, বয়রা ও লেবুর শরবতসহ নানা ফলের জুস মিলছে এসব দোকানে। এসব শরবতের দাম গ্লাস প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা। আর বরফ, পানি, লেবু ও বিট লবণ দিয়ে তৈরি সাধারণ শরবত বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। এর পাশাপাশি বেড়েছে আইসক্রিম ও কোমল পানীয়র বিক্রিও।

মহেলপুর গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক মো. নাজিম উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘এই বয়সে এত গরম আর সহ্য হয় না। বাইরে বের হলে মনে হয় যেন আগুন ঝরছে।’ফুলবাড়ী পৌর শহরের ভ্রাম্যমাণ শরবত বিক্রেতা সাইদার রহমান (৫৫) জানান, ‘তোকমা, এলোভেরা, বেল, শিমুলের মূল, হরতকি, বয়রা আর লেবুর শরবত বিক্রি করি। গরম বাড়লে বিক্রি ভালো হয়। তবে প্রচণ্ড রোদে মানুষ কম বের হয় বলে দিনের বেলায় বেচাবিক্রি কম, বিকেলে কিছুটা বাড়ে।’

আরেক বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বরফ, পানি, লেবু ও বিট লবণ দিয়ে ১০ টাকায় শরবত বিক্রি করছি। গরম যত বাড়ছে, চাহিদাও তত বাড়ছে। রোদ সহ্য করতে না পেরে আমাকেও মাঝেমধ্যে ছায়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে।’

কোমল পানীয়র স্থানীয় ডিলার মো. আব্দুল কাইয়ুম জানান, ‘গরমের কারণে এবার কোমল পানীয়র বিক্রি আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।’ দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জর হোসেন বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে জেলায় তাপমাত্রা ৩৬.০ থেকে ৩৭.০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪৯ শতাংশ।’

তিনি আরও জানান, ‘বর্তমানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে চললেও তীব্রতার মাত্রা বাড়ছে। বুধবার পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় গরম আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাতাসের গড় আর্দ্রতা ছিল ৭০ শতাংশের বেশি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘তাপদাহের কারণে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী সর্দি-জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাদের অবস্থা গুরুতর, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।’  ##

সম্পাদকীয় :

Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

রাজশাহীর সময় অনলাইন নিউজ পোর্টাল আবেদনকৃত চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা ।

অফিস :

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204 Thana : Motihar,Rajshahi

Email : [email protected],                    [email protected]