‘আসল যুদ্ধের’ বাস্তবতায় বাংলাদেশও


অনলাইন ডেস্ক: , আপডেট করা হয়েছে : 04-04-2025

‘আসল যুদ্ধের’ বাস্তবতায় বাংলাদেশও

ওয়ানডে নিয়ে আমাদের ধারণাটা খুব পরিষ্কার ছিল যে কিভাবে খেলতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এদিক থেকে সবার ফোকাসটা আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। সামনে আরো কমে যাবে। আমাদের উপায় নেই। আসল যুদ্ধে টিকে থাকতে গেলে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে আমাদের ভালো করতেই হবে। -নাজমুল আবেদীন ফাহিম, বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান

ওয়ানডে একসময় ভালো খেলত বাংলাদেশ। ‘একসময়’ বলার কারণ এখন আর সেভাবে এই সংস্করণে নিজেদের তারা মেলে ধরতে পারে না। নিকট অতীত অন্তত সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। তাই বলে পেছনের সোনালি দিনগুলোও মুছে যায়নি।

টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির তুলনায় এই সংস্করণই তাদের জন্য বেশি মানানসই ছিল। কিন্তু কেন?

এর একটি ব্যাখ্যাও আছে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে, ‘৫০ ওভারের সংস্করণটি আমাদের সঙ্গে খুব যেত। কারণ টেস্ট ক্রিকেট খেলতে গেলে যেসব দক্ষতা থাকা চাই, এই সংস্করণে এর শতভাগ দরকার পড়ে না। আবার টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য যে ধরনের শারীরিক সক্ষমতা ও গতি থাকা দরকার, সেদিকটাতেও আমরা পিছিয়ে আছি।

তবে ওয়ানডেতে এসবেরও শতভাগ প্রয়োজন হয় না। এ জন্যই ৫০ ওভারের সংস্করণে আমাদের ছেলেরা মানিয়ে নিতে পারত বেশি।’

অবচেতনেই হোক বা সচেতনে, তিনিও বলছেন যে ‘পারত’। এখন এই না পারার চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে এই সংস্করণে বেশি বেশি ম্যাচ খেলার কোনো বিকল্প নেই।

কিন্তু ম্যাচের সংখ্যা উল্টো কমছে। মে মাসের পাকিস্তান সফর থেকেই যেমন তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সেখানে গিয়ে শুধুই পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। আগামী বছরের কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই সফর থেকে ওয়ানডে বাদ পড়েছে।

এই চর্চা অবশ্য নতুন নয়।

যখন যে সংস্করণের বিশ্ব আসর সামনে থাকে, সেটি নিয়েই বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রশাসন বুঁদ হয়ে থাকে। সম্ভব হলে সামনের কোনো সফরসূচি থেকেও ওয়ানডে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ফাহিমের বক্তব্যে আছে সেই সুরও, ‘যেহেতু সামনের বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে, তাই চেষ্টা থাকবে এই সংস্করণের ম্যাচ একটু বেশি খেলার জন্য। সব সময় চাইলেই যে ওয়ানডে বাদ দিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ করে ফেলতে পারব, তা-ও নয়। যেমন—পাকিস্তান সফরের ক্ষেত্রে পেরেছি। সব সময় তা সম্ভব না-ও হতে পারে।’

অবশ্য বর্তমান বাস্তবতায় ওয়ানডে আর তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়, এমনকি বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির কাছেও। প্রায়ই এই আলোচনাও উঠতে শোনা যায় যে চার বছরে ওয়ানডে বলতে শুধু একটি বিশ্বকাপই হবে। এর বাইরে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে দুই পক্ষ চাইলেই শুধু ওয়ানডে জায়গা পেতে পারে। এসব আলোচনাকে অবাস্তবসম্মত বলেও মনে হয় না ফাহিমের, ‘এমন আলোচনা বাস্তবসম্মতই। এখন সব কিছুকে সমানভাবে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব। অগ্রাধিকারের কথা বললে এখানে প্রথমে আসে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির কথাই। তারপর হয়তো ৫০ ওভারের সংস্করণের কথা আসে। এ জন্যই হয়তো ওয়ানডেটা একটু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এই মুহূর্তে।’

নিজেদের অগ্রাধিকারও বদলানোর সময় এসে গেছে বলে মনে করেন ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির প্রধান, ‘(টেস্টে বাংলাদেশ যে অবস্থায় আছে) এখান থেকে বের না হয়ে কোনো উপায় নেই। ক্রিকেটে ভালো করতে গেলে এই সংস্করণে ভালো করতেই হবে। এই জায়গাটায় আমরা গুরুত্ব দেব।’ আসল যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ক্রমেই গুরুত্ব হারাতে থাকা ওয়ানডের বাস্তবতাও এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ দেখেন না তিনি, ‘ওয়ানডে নিয়ে আমাদের ধারণাটা খুব পরিষ্কার ছিল যে কিভাবে খেলতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এদিক থেকে সবার ফোকাসটা আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। সামনে আরো কমে যাবে। আমাদের উপায় নেই। আসল যুদ্ধে টিকে থাকতে গেলে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে আমাদের ভালো করতেই হবে।’


Publisher & Editor :Md. Abu Hena Mostafa Zaman

Mobile No: 01971- 007766; 01711-954647

Head office: 152- Aktroy more ( kazla)-6204  Thana : Motihar,Rajshahi
Email : [email protected], [email protected]